রুপকথার গল্প

মে আই কাম ইন স্যার ?
আসো ।
এই , তুমি জুতা পড়ে এখানে ঢুকছ কেন ?
স্যার আমি পা মুছে ঢুকছি ।
যাও…… জুতা, মোজা খুলে ভালো করে হাত পা ধুয়ে আসো ।
কি ব্যাপার ? এতোক্ষন দরজা খোলা রেখেছ কেন ?……………………
আমি হাত পা ভালো ভাবে ধুয়ে রুমে ঢুকলাম ।
স্যার নীল একটা মনিটরের দিকে তাকিয়ে আছেন । বলতে লাগলেন , প্রথম কম্পিউটার আবিস্কার করেন ……………
হটাত রাতুল হাচি দিল ।
কে ? কে হাচি দিল ??
গেট আউট । কারো হাচি আসলে রুমের বাইরে গিয়ে দিবে । এরপর হাত মুখ ভালো করে ধুয়ে আসবে ।
পলাশ তিন দিন পর ক্লাসে আসল ।
তোমার কি হয়েছিল ? কম্পিউটার শিখার কি আগ্রহ নাই ???
স্যার আমার জ্বর আসছিল । সিজনাল ভাইরাল ফিভাল ।
কি বললে ?? গেট লস্ট । সুস্থ না হয়ে কেউ এই ল্যাবে ঢুকবা না ?

এইখানে কত টাকা খরচ করে কম্পিউটার গুলা কেনা হয়েছে জানো ? আর তোমরা !! প্রতিদিন হাচি কাশি দিয়ে কম্পিউটার গুলায় ভাইরাস দিয়ে দিচ্ছো !! এটা কোন অসুস্থ মানুষের জায়গা না ।
এখন থেকে আমি বারান্দায় দুই বালতি পানি রাখবো । সবাই রুমে ঢুকার আগে আমার সামনে ওযু করে রুমে ঢুকবা ।
মনে থাকবে ???
জি স্যার থাকবে ।
স্যার কে দেখতাম প্রতিদিন যত্ন করে মনিটর, কিবোর্ড আর মাউস স্যাভলন আর পানির হাল্কা মিশ্রনে কাপড় ভিজিয়ে পরিস্কার করছেন ।

একদিন স্যার বললেন, ২০০০ সালে ওয়াই টু কে নামক ভাইরাস আক্রমনে পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার নস্ট হয়ে যাবে ।
আমরা হা করে স্যারের কথা গুলো শুনতাম । আমি একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম , স্যার এই ভাইরাস গুলো কি সংক্রামক?
অবশ্যই । মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রকার প্রাণী এমনকি ইদুর কিংবা তেলাপোকার মাধ্যমেও এগুলো ছড়াতে পারে ।

এর প্রায় আট বছর পরের ঘটনা । স্যারের সাথে দেখা করতে গিয়েছি । স্যারের এক স্টুডেন্ট তার কাছে একটা পেন ড্রাইভ দিয়ে চলে যাচ্ছিলো ।
স্যার হুংকার দিয়ে উঠলেন । গিয়াস , পেন ড্রাইভের ঢাকনা কই ? নিয়ে আসতেছি বলে গিয়াস দৌড় দিল ।
স্যার তার বুড়ো আংগুল দিয়ে পেন ড্রাইভটি চেপে ধরে আছেন ।

জীবনের কিছু কিছু ঘটনা রোমন্থন করলে রুপকথার গল্প শুনার মতোই চমকে উঠি । কত সুন্দর , শুভ্র , নির্ভেজাল , নিস্পাপ আর নির্মল ছিলো সেই দিনগুলি !!!!!!!!!!

৬৩৮ বার দেখা হয়েছে

৭ টি মন্তব্য : “রুপকথার গল্প”

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।