কেউ ব্যথা পেয়ে কবি হয়,
কেউ শখ করে কবি হয়ে ব্যথা পায়।
কারো কবিতা মাঝপথে থেমে যায়, তখন
ফলহীন বৃক্ষের ন্যায় কবি শুধু দাঁড়িয়ে রয়।
আবার কারো কারো কবিতা ফল্গুধারার মত
অলক্ষ্যে নিশিদিন অন্তরে অন্তরে বয়ে যায়।

প্রেমের অনুভব ছাড়া কবি হওয়া যায়না,
ব্যথার দহনে পরিশুদ্ধ হয় কবির যাচনা।
কারো দু’টি মায়াবী চোখের অনন্য দৃষ্টি,
নীরবে করে যায় কত শত কবিতার সৃষ্টি!

করোটির ভেতরে রয়েছে এক বিষাদাশ্রম,
সেখানে গুমরে কাঁদে কত সব বিষাদের ছায়া।
অথচ মুখে আঁকা থাকে প্রসন্নতার সৌম্য ছবি
নিরন্তর বেদনার মাঝেও জ্বলে হাসির রবি।

এ কেমন বৈপরীত্য, হায়!
হৃদয়-করোটি জুড়ে থাকা এসব বিষন্নতা
বাহ্যিক হাসির আড়ালে সব ঢাকা পড়ে রয়!
বিষাদ বিভ্রমগুলো ক’জনাই বা দেখতে পায়?

কারো মুখে হাসি থাকা মানেই প্রসন্নতা নয়।

ওহে বজ্রাহত পথিক, কান পেতে তুমি শোন,
জীবনের পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়, কখনো ছিল না।
তুমি বাক হারিয়েছো? হতচকিত, দিশেহারা?
চক্ষুস্মান হয়েও দৃষ্টিহীন? ওঠো পথিক, ওঠো।
শিরদাঁড়া সোজা কর, ঋজু মনে এগিয়ে যাও।
দৃষ্টি মেলে ধরো সুদূর দিগন্তে আর উচ্চাকাশে।

উঠে দাঁড়াও, সম্মুখে এগিয়ে চলো দৃপ্ত পদযোগে।
শোন, ঝিরিঝিরি দখিনা বাতাস কী বলে তোমায়।
বলে, আমি উত্তরে যাচ্ছি,

কিছু কিছু ছবি আছে, চোখ ঝলসে দেয়।
ওরটাও তেমনই, যেন আলোর ঝাপটা।
একবার চোখ পড়ে তো সরানো যায় না।
জোর করে সরালেও প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে।

কিছু কিছু মুখ আছে, ভালোবাসার আধার।
হাজার অচেনা হলেও ভালোবাসা দিয়ে যায়।
দেখে যেন মনে হয় সেটা আজন্ম চেনামুখ,
চোখ দুটো বারেবারে হাতছানি দিয়ে ডাকে।

নক্ষত্রের মত ঝিকিমিকি করা ওদুটো চোখে
চোখ পড়লে কিছুতেই স্থির থাকা যায় না।

এখনো দাঁড়িয়ে আছি সেখানেই,
যেখানে তুমি রেখে গিয়েছিলে।
কোন অগ্র পশ্চাৎ নেই,
কোন ভূত ভবিষ্যত নেই, তবু
সেখানেই ঠায় দাঁড়িয়ে আছি,
এখনও নির্বিকার, যেমন ছিলাম।

এখনো দাঁড়িয়ে আছি সেখানেই,
আনত পত্রপল্লব, শাখাপ্রশাখা সহ,
পাখিহীন, প্রজাপতিহীন দেবদারু
যেমন নির্বাক, নিথর, মৌ্ন থাকে।
বাতাস এলে শুনি মর্মর ধ্বনি,
বৃষ্টিতে ধুয়ে যায় যত নোনা পানি।

আকাশে এখনো চাঁদ ওঠে,