অপছন্দের জিনিস

ক্যাডেটদের একটা অপছন্দের জিনিস হচ্ছে সকালে ঘুম থেকে উঠে পিটিতে যাওয়া। আমি তার ব্যতিক্রম নই। সকালে এত আরামের ঘুম রেখে কার পিটিতে যেতে ভাল লাগে? যদিও সেপ্টেম্বর মাসের রাজশাহীর গরমে রাতের ঘুম কতটুকু আরামের সেটা বলাই বাহুল্য। মরার উপরে খাড়ার ঘায়ের মত আছে লোডশেডিং। কারেন্ট গিয়ে ফ্যান পুরোটুকু থামার আগেই তিন হাউজ থেকে তারস্বরে চিৎকার শুরু হয়

এএএএএ শাজাহান ভাই, জেনারেটর ছাড়েন

যদিও তারিক বা কাসিম হাউজের চিৎকার শাজাহান ভাই পর্যন্ত পৌঁছায় না,

বিস্তারিত»

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২৫শে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি?

সকাল বেলা ড্রিল করা পিটির চেয়ে কম কষ্টকর, কিন্তু পুরো জিনিসটা প্রচন্ড রকমের বিরক্তিকর। স্টাফ একটু পর পর এসে কানের কাছে ভ্যান ভ্যান করে যাবে।

কি ক্লাস ১০, পা উঠে না? পায়ের মাঝখানে কি বাইন্ধা রাখছো? গুটনা টাইট করে ড্রিল হবে। প্রেড, মধ্য থেকে জলদিইইইইইই চল!

অসম্ভব রকমের মানসিক নির্যাতন। তাও আবার সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই। আজকের সারাদিন যে কেমন যাবে চিন্তা করছি আর “গুটনা” টাইট করে ড্রিল করার চেষ্টা করছি।

বিস্তারিত»

আমার রাংগামাটি

আমার রাঙ্গামাটি।

আমার প্রথম রাঙ্গামাটি দর্শন নব্বই দশকের শুরুতে তরুণ বয়সে। সেটা ইয়ার বন্ধুদের সাথে কোন আনন্দ ভ্রমণ বা পর্যটন উপলক্ষ্যে নয়। আর সে বয়সে পরিবার নিয়ে নিরিবিলি ছুটি কাটানোর মত পরিবারও হয়ে ওঠেনি।

আমি রাঙ্গামাটি গিয়েছিলাম একান্তই চাকরির সুবাদে, অর্থাৎ পেটের দায়ে।

সেনাবাহিনীর পদাতিক কোরের কর্মকর্তা হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বদলি অনিবার্য জেনেও প্রথম বদলিতে আপ্লুত হওয়ার কোন কারণ খুঁজে পাইনি।

বিস্তারিত»

ক্ষণিকের দেখা, এ মায়াময় ভুবনে – ৫

আগের পর্বটি পড়তে পারবেন এখানেঃ https://cadetcollegeblog.com/khairulahsan/63352

অভূতপূর্ব উদারতাঃ

মাস দুয়েক আগে আমি আর আমার স্ত্রী হাসপাতালে গিয়েছিলাম, এক্সরে করানোর জন্য। আমি এক্সরে বিভাগে প্রবেশ করে রিসেপশনে যখন জিজ্ঞেস করছিলাম কোথায় যেতে হবে, তখন লক্ষ্য করলাম আমাদের ঠিক পিছে পিছে আসা একজন প্রৌঢ় ভদ্রলোক সিঁড়ি দিয়ে উঠেই হাতের বাম দিকে চলে গেলেন। রিসেপশন থেকেও আমাদেরকে ঠিক সেই দিকেই যেতে বলা হলো।

বিস্তারিত»

স্মৃতিকথা- কাজলা দিদি

ঘূর্ণিঝড় ‘সি-ত্রাং’ এর প্রভাবে আজ সারাদিন ধরে ঝিরঝিরে ঝরা বৃষ্টির প্রকোপটা বিকেল থেকে যেন বেড়ে গেল। থেকে থেকে দমকা হাওয়াও বইতে শুরু করলো। বিকেল পাঁচটার দিকে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। বাসার কিছুটা সামনে কয়েকটা বড় বৃক্ষ রয়েছে। সেগুলোর দিকে আমি প্রায়ই তাকিয়ে থেকে পাখিদের আনাগোনা দেখি। ঐসব গাছে প্রচুর টিয়া পাখি বসে। ঘন সবুজ পাতার সাথে মিশে যাওয়া টিয়া পাখিদেরকে শনাক্ত করার চেষ্টা করে চোখের পাওয়ার পরীক্ষা করি।

বিস্তারিত»

আমার আবার বেঁচে উঠা

মে ২০২০
প্রেক্ষাপটঃ করোনা ভাইরাসের আক্রমণে মহামারী চলমান। “Stay home” এর campaign চলছে। প্রতিদিনের রোজগারে বেঁচে থাকা মানুষের সাথে এটা প্রহসন। ধনীরা ঘরে বসে, আর গরীবরা প্রতিদিন গায়ে-গায়ে ঘেঁষে সামাজিক দূরত্বের বিপরীতে অন্ন যোগাচ্ছে। বেঁচে থাকার যুদ্ধে গরীবের শ্রম আর ঝুঁকির বিনিময়ে বেঁচে আছে ধনীরা। বেঁচে আছে অর্থনৈতিক কাঠামোর গালভরা সব পরিমাপক।

আমি ধনী সমাজে বন্দি। একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে কর্মরত আর পুঁজিবাদী সমাজের কাঠামোতে আমার দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত।

বিস্তারিত»

ক্যান্সার চিকিৎসায় সাফল্যের গল্প

ক্যান্সার, আমার মায়ের। ব্রেস্ট ক্যান্সার। নরম প্রকৃতির আম্মুর বয়স ৬৫, ডায়াবেটিস ২০০০ সাল থেকে। আমার নানা আর বড়খালা যথাক্রমে প্রস্টেট ও লিভার ক্যান্সারে মারা গিয়েছেন। আম্মু মেজ। সেজ খালাও ব্রেস্ট ক্যান্সারের রোগী।

২০১৭ সালে, আমার মায়ের ক্যান্সারটা যখন ধরা পড়লো তখন আমি ঢাকাতে একটি বেসরকারী সংস্থাতে সবেমাত্র চাকুরি শুরু করেছি। বিয়ে করে বাসা নিলাম মিরপুর-৬ এ। গ্রাম থেকে বাবা-মা ঢাকাতে আমার বাসায় এলেন ডাক্তার দেখাতে।

বিস্তারিত»

নির্বাক হৃদয়ে, বিহ্বল চোখে শুভ্র সফেদ মেঘপুঞ্জের সখ্যে অতিবাহিত মনোমুগ্ধকর কিছু মুহূর্ত (ছবিব্লগ)

প্রায় চার মাসের মত সময় ধরে আমাদের প্রবাসী মেজো ছেলের বাসায় একটি চমৎকার অবকাশ কাটিয়ে আমরা সেদিন দেশে ফিরে আসলাম। কোথাও যাবার সময় যেমন মনে একটা আনন্দ থাকে, তার বিপরীতে ফিরে আসার সময় মনে অনুভূত হতে থাকে সাময়িক বিদায়ের একটা সূক্ষ্ম বেদনাবোধ। বিশেষ করে একেবারে শেষের সময়গুলোর স্মৃতি মনে ভাসতে থাকে। এবারে নবজাতক শিশুর কারণে বৌমা বিমানবন্দর পর্যন্ত আসতে পারেনি।

বিস্তারিত»

লাবকের কড়চা-২। পিকনিক বিভ্রাট

টেক্সাসের উঁচানো আঙ্গুলের মত আংশ, যাকে বলে প্যানহ্যান্ডেল অর্থাৎ কিনা কড়াই হাতা, তার ঠিক গোড়ায় ছোট্ট শহর লাবক। বাসিন্দা লাখ দুই, বড় কারবারের মধ্যে তুলো আর গবাদি ব্যাবসা। আমেরিকার প্রাচুর্যের প্রতীক যেসব বড় বড় ঝকমকে শহর যেমন নিউইয়র্ক শিকাগো লস এঞ্জেলেস লাস ভেগাস- এসবের সাথে মোটেই মেলানো যাবে না। বিশাল বিজন প্রান্তরের মাঝে হঠাৎ একফোঁটা আলোর ঝলকানি। এখানেই টেক্সাস টেক ইউনিভারসিটি, এর জন্যই এখানে যত প্রানের স্পন্দন।

বিস্তারিত»

ও যে কেড়ে আমায় নিয়ে যায় রে ….

তখন ১৯৯৪ সাল। দাপ্তরিক কাজে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় জেলায় যেতে হয়েছিল। পাবনায় যখন গেলাম, তখন করণীয় কাজটুকু সেরে ফেলার পর হাতে কিছুটা সময় রয়ে গেল। পাবনার ডাঃ ইসহাক একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক ছিলেন, তার নামে একটি সড়কেরও নামকরণ করা হয়েছে। তার ছেলের সাথে আমার বন্ধুত্ব হয়েছিল, তিনিও এলাকায় বেশ প্রভাবশালী ছিলেন। তাকে বললাম, পাবনা মানসিক হাসপাতালটি একবার দেখে যেতে চাই। মানসিক রোগীদের ব্যাপারে আমি আজীবন কৌতুহলী।

বিস্তারিত»

মেলবোর্নের দিনলিপিঃ সৌজন্য, সহযোগিতা, সুআচরণ এবং সম্মান

উপরে যে কয়েকটি গুণাবলীর কথা উল্লেখ করলাম, তার মধ্যে প্রথম তিনটি যাদের মধ্যে আছে, শেষেরটিও তাদের মধ্যে অবশ্যই পাওয়া যাবে। অর্থাৎ যিনি অপরের প্রতি সৌজন্য, সহযোগিতা এবং সুআচরণ প্রদর্শন করে থাকেন, তিনি অপরকে অবশ্যই সম্মানও করে থাকেন, এবং এ কারণে নিজেকেও অপরের নিকট সম্মানীয় করে তোলেন। অস্ট্রেলিয়ায় এটা আমার তৃতীয় সফর। প্রতিবারে আমি এখানকার পথে ঘাটে, ট্রামে বাসে ট্রেনে, শপিং মলে, রেস্তোরাঁয় এখানকার মানুষের মাঝে এই গুণগুলোর পরিচয় পেয়েছি।

বিস্তারিত»

লাবকের কড়চা-১। আন্তর্জাতিক সপ্তাহ

সেই যে এক শীতের রাতে, উত্তুরে বাতাসে কেঁপে ঝেপে এসে হাজির হয়েছিলাম টেক্সাস কড়াই হাতার একেবারে মধ্যিখানে এই ছোট্ট শহরে, তারপর নানা চমকের ভেতর দিয়ে কোথায় যে কেটে গেছে মাস দুয়েক, বুঝতেই পারিনি। এদেশে সপ্তাহে মাত্র দু’দিন– উইক ডে এবং উইক এন্ড। তাই দিন যায় উল্কার বেগে। এমনি সময়ে এল আন্তর্জাতিক সপ্তাহ– দেশি-বিদেশি ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে বেশ জাঁকালো আয়োজন। খেলাধূলো, নাচগান, ফ্যাশন শো- এরকম নানা ব্যাপার।

বিস্তারিত»

ভারী জীবনের ভারবাহী কিছু মানুষের কথা…..

দিনটি ছিল শনিবার, ১১ জুন ২০২২। ড্যান্ডিনং স্টেশনে নেমে আমরা অন্য লাইনের একটি ট্রেন ধরার জন্য প্ল্যাটফর্ম বদল করতে যাচ্ছিলাম। স্টেশনটি সে সময়ে মোটামুটি জনশূন্য ছিল বলা যায়। কিছুদূর এগোতেই দেখি, প্ল্যাটফর্মের মেঝেতে কে যেন শুয়ে আছে। তার পাশে একজন হাটু গেঁড়ে বসে তার মাথায়, গালে পরম মমতায় হাত বুলাচ্ছে। দু’জন ইউনিফর্মধারী স্টেশন সিকিউরিটি স্টাফ উদ্বিগ্ন চেহারায় শায়িত ব্যক্তির দিকে তাকিয়ে আছে এবং মৃদু পায়চারি করছে।

বিস্তারিত»

ক্ষণিকের দেখা, এ মায়াময় ভুবনে – ৪

আগের পর্বটি পড়তে পারবেন এখানেঃ ক্ষণিকের দেখা, মায়াময় এ ভুবনে – ৩

এ পর্বে আমি যে দুটো ‘ক্ষণিকের দেখা’ স্মৃতি রোমন্থন করবো, তার প্রথমটি একটি দৃশ্যের, আর পরেরটি একটি (মানুষের) মুখের। অবশ্য প্রথমটি শুধুমাত্র একটি দৃশ্যের হলেও, তার পেছনে ছিল একটি অদেখা, কল্পিত মুখও।

সে বহুদিন আগের কথা। আমার বয়স তখন পঁচিশ-ত্রিশের মাঝামাঝি, আমি সেনাবাহিনীর একজন তরুণ অফিসার। ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে সেনাবাহিনীর বাৎসরিক শীতকালীন যৌথ প্রশিক্ষণ অনুশীলন হয়ে থাকে।

বিস্তারিত»

ক্ষণিকের দেখা, মায়াময় এ ভুবনে – ৩

এর আগের পর্বটি পড়তে পারবেন এখানেঃ ক্ষণিকের দেখা, এ মায়াময় ভুবনে -২

২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারী, আমরা দুই বন্ধু মিলে সস্ত্রীক ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার (সম্ভবতঃ) পদ্মা তীরবর্তী মৈনট ঘাটে বেড়াতে গিয়েছিলাম। যদিও এটাকে অনেকে ঢাকার ‘মিনি কক্সবাজার’ বলে থাকেন, আমার কাছে তেমন আহামরি কিছু মনে হয়নি। তবে যাওয়ার পথে থেমে থেমে এটা ওটা করে বেশ আনন্দ করেছিলাম, যেমন সরিষা ক্ষেতে নেমে সোঁদা গন্ধের মাটিতে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা,

বিস্তারিত»