মগবাজার মোড়ের কাছে এসে যাওয়ার পর আরেকবার শান্ত’র দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে মনযোগ দিয়ে তাকাল ফাহিম। নাহ ওর চেহারা একেবারে নরমাল। কোন উত্তেজনার ছিটেফোটা সেখানে নেই। কিছুটা হতাশ ফাহিম; শান্তটা এমন খ্যাপাটে হয়ে পড়বে বুঝলে তার সাথে সে আসত না আর সে না আসলে যে তার একা আসার সাহস কুলাতো না একথা সে ভালভাবেই জানে। কিংবা কে জানে হয়তো কুলাতো কেননা শান্তর পরিবর্তন গত কয়েকদিনে বড়ই রহস্যজনক মনে হচ্ছে শান্তকে বড়ই অচেনা মনে হচ্ছে।রিকশা থেমে গেল।
বিস্তারিত»জোয়ার্দারের কাণ্ড, মজুমদারের কীর্তি
১.
আনিস জোয়ার্দার পরিষ্কার বুঝতে পারলেন, ঘরে কেউ হাঁটাহাঁটি করছে। চোর হওয়াই স্বাভাবিক। তবু তিনি খুশি হয়ে ওঠেন। কারণ একটা ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন দেখছিলেন। ঘুম ভাঙ্গাতে এখন আর স্বপ্ন নেই। চোর আছে বটে, কিন্তু চোরকে বধ করার কৌশলও তার জানা আছে। তিনি অভিজ্ঞতা থেকে জানেন চোরদের সঙ্গে একটু ভালো ব্যবহার করলে, একটু সুখ-দুঃখের কথা বললে ওরা ভড়কে যায়। আদর-সমাদর পেলে চোররা ভদ্রলোকের চেয়েও ভদ্রলোক।
আনিস জোয়ার্দার তাই কম্বলের তলা থেকেই বললেন কে-রে?
জীবনের গল্প – ৩
-
সাগর
আমার সবচেয়ে কাছের একজন মানুষের কথা আজ বলব, যাকে সেই ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি। সঙ্গত কারনেই ছদ্মনাম ব্যবহার করলাম কারন আমিও ওর মতই ওকে কারো করুনার পাত্র বানাতে চাই না। প্রথম যেদিন ও কলেজে পা রাখল সেই দিন থেকেই ওর সাথে আমার খুব আন্তরিক একটা সম্পর্ক হয়ে দাড়াল, ঠিক কি কারনে জানি না একসময় আমরা প্রানের বন্ধু হয়ে দাড়ালাম।
বিস্তারিত»ফ্রেমবিষয়ক রচনাখণ্ডঃ পুরোনো জন্ম এবং নতুন মৃত্যু
প্রথম খণ্ড
গাড়ীটা চলছিল অনেক জোরে। জানালা খোলা। আমি অনেকদিন চুল কাটাইনি। তুমুল বাতাসে এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল বারবার। আমি ঠিক করার চেষ্টা করছিলাম না। আমার চোখ ঢেকে যাচ্ছিল ঝাপ্টায়, বার বার!
আমরা দুই ভাই এয়ারপোর্ট রোড দিয়ে শাঁ শাঁ করে ছুটে যাচ্ছি। ড্রাইভিং সীটে আমার খালাতো ভাই। বিস্রস্ত মুখে একগাল খোঁচা খোঁচা দাড়ি। বিপজ্জনকভাবে কয়েকটা গাড়িকে এদিক ওদিক করে পাশ কাটালো।
বিস্তারিত»জীবনের গল্প – ২
জীবনের গল্প – [ ১ ]
-
জর্জ
আমার খুব কাছের বন্ধুদের মধ্যে জর্জ একজন। সবসময় হসি খুশী থাকে, দেখলে বোঝার উপায় নেই কতবড় ভার তার বুকের উপড় চেপে বসে আছে। ওকে যখন থেকে দেখেছি তখন থেকেই ভাবতাম এই ছেলেটার মত হাসি খুশী আর মাস্তিবাজ যদি হতে পারতাম তাহলে কত মজাই না হত। কখনওই ভাবি নি ওর মনের মধ্যে কত কষ্ট লুকিয়ে আছে।
বিস্তারিত»গল্পঃ স্মৃতিভ্রষ্টতার উল্টোযাত্রা
এটাই প্রারম্ভের অন্ত অথবা অন্তিমের আরম্ভঃ এরকম ঘোষণায় সচকিত হয় রোমকূপ। সামনে জীবন নাই, আশা নাই, সুর নাই, নারী নাই। নেশা নাই, কবিতা নাই, তোমার দুচোখ নাই। তার থেকেও তীব্রশরীর, স্তন আর নাভিমূল নাই, তোমার মধুকূপী বাহু নাই, রীডসুলভ আঙুল নাই। প্রথাগত শূন্যতার চাইতেও বেশি কিছু, অনেক কিছু জীবন ছাড়িয়ে যার ছায়া পড়তে পারে, আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। সংখ্যারেখার প্রমাণবিন্দু হারিয়ে গেলে খুব বিপন্ন লাগে।
বিস্তারিত»আমার হুজুর হওয়ার কাহিনী!!!! (৫ মিনিট)
লাস্ট টার্মে কলেজে পৌছেই সিদ্ধান্ত নিলাম নিজের মাঝে পরিবর্তন আনতে হবে! কোন ধরনের নিয়ম বহির্ভুত কাজে যোগ দিব না! প্রপার ক্যাডেট বলতে যা বোঝায়,তাই হব! ঠিক করলাম নামাজ পড়তে হবে! পরদিন ফজর থেকে শুরু করলাম নামাজ পড়া। জুনিয়রকে বলে দিয়েছি রিভেল দিতে,ক্লাস সেভেন এইট নামাজ পড়ে,তাদের থেকে হুজুর দেখেই একটাকে বললাম “ফজরের নামজে জামাতের আগে ডাক দিবা”! জুনিয়রটাও মহাউৎসাহে ডাক দেয় প্রতিদিন! প্রথম দুদিন আমারও চরম ঊৎসাহ!
বিস্তারিত»একজন গল্প বহনকারী মানুষের গল্প
তোয়ালে ছেড়ে দীপ্র যখন আন্ডারওয়্যার পড়ল তখন ঘড়িত ন’টা বেজে তিন। সদ্য সে গোসল সেরে বেরিয়েছে। এখনও চুল ভেজা।
তার আন্ডারওয়্যারটির রং কালো। অনকে বাছাই করে আলমিরায় অপেক্ষাকৃত কম ময়লা এটাকেই পেল সে। বেকারদের পরিচ্ছন্ন থাকা বাধ্যতামূলক নয়।
এই যে তার কালো আন্ডারওয়্যারটি তার জীবনের সাথে যুক্ত হয়েছে সেটা কিন্তু বেশি দিন আগে নয়। একমাস হতে এখনও তিন দিন বাকী। টিউশানী থেকে ফিরছিল সে।
জীবনের গল্প – ১
কয়েকদিন ধরে শুধু খারাপ খারাপ খবর পাচ্ছি। অমুক বন্ধু ছ্যাকা খেয়ে পাগল হয়ে গেছে, সারাদিন উলটা পালটা জিনিস খেয়ে পড়ে থাকে, বাসায় গ্যাঞ্জাম করে, তো অমুক কাজিন ফোন করে শুধু ঘ্যানঘ্যান করে যে বাসায় জেনে ফেলেছে,এখন সে আত্মহত্যা করে ফেলবে না মানলে। কয়েকজনের আবার পারিবারিক সমস্যা, বাবা মার মধ্যে সমস্যা, সেটাকে একটা ইস্যু করে সারাদিন বিষন্ন হয়ে বসে থাকে আর সন্ধ্যা হলেই শুকনো-ভেজা খোঁজার দৌড়াদৌড়ি শুরু করে।
বিস্তারিত»বৃষ্টির জন্য
১.
আষাঢ় শ্রাবণে আকাশ অভিমানী হয়। ঘন ঘন তার বুকে পুঞ্জিভূত হয় ক্ষোভ। কখনও কখনও তা সুপেয় তরলে দুঃখ হয়ে ঝরে পড়ে। আকাশের সেই ক্ষোভের নাম মেঘ। সেই দুঃখের নাম বৃষ্টি।
এ গল্পটা বৃষ্টি নিয়ে। তবে এটা কোন আষাঢ়ে গল্প নয় এমন কি আষাঢ়েরও গল্প নয়। শ্রাবণের কোন এক দিনের গল্প। জিহাদ ঘরের বাহির হবে বলে তৈরী হল।
কিন্তু গত তিন দিন ধরে একটানা বর্ষণ হচ্ছে।
বিস্তারিত»খ্যাপ
আর কেউ বুঝে কিনা কে জানে, তবে অন্ধকারের যে একটা নিজস্ব আলো আছে তা রুস্তম শেখ বেশ ভালো মতই বুঝে। আলোটা ধরতে পারে বলেই ঘোর অমাবস্যায়ও পচিশ তিরিশ হাত দুরের জিনিস সে স্পষ্ট দেখতে পায়। এই যেমন এখন। ডাকাতিয়া নদীর যে জায়গায় সে গলা পানিতে দাঁড়িয়ে আছে, একটা শত বছরের পুরনো পাকুড় গাছের আড়ালে, তা একহাত দূর থেকেও কোন মানুষ বুঝতে পারবে না। অথচ রুস্তম শেখ তিরিশ হাত দূরে খালের ওপারে বড় একটা বন বিড়ালকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে।
বিস্তারিত»সাড়ে তিন
১.
কৃষ্ণকান্দা গ্রামের উত্তর প্রান্তে আগুন লেগেছে। দখিন সমীরণে সে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। অগ্নিতে ঘৃত সংযোগ হয়েছে। অথচ এ গ্রামেরই কতিপয় বালক তার খুব কাছেই ডোবা সেচে মাছ ধরছে। তাদের এ বিষয়ে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা মাছ ধরছে বড় খাল সংলগ্ন সড়কটার পাশের ডোবায়। এলাকার সবচেয়ে বড় সড়ক এটাই, হাট হয়ে গঞ্জে গিয়ে মিশেছে। হাটের কিছু আগে মধ্য বিরতি হিসেবে রেল লাইনটাও বয়ে গিয়েছে এই সড়কের উপর দিয়েই।
ফিরে দেখা
গলায় ঝুলে থাকা গামছাটাকে কষে মাথায় বেঁধে ক্ষেতের আলের উপর বসে পড়েন আজিজ মিয়া। হাত বাড়িয়ে মাটিতে পড়ে থাকা হুক্কাটাকে তুলে সুড়ুক সুড়ুক করে টান দেন তিনি। এক গাল ধোঁয়া ছেড়ে ক্ষেতে হাল ধরে থাকা ছেলে রহমানের দিকে তাকিয়ে হাঁক দেন।
“চোখ কান খুইলা রাখিস রে রহমান, ওরা যে কোন সময় আয়া পড়তে পারে।”
ছেলেটার দিকে তাকিয়ে চোখ মুখ কোমল হয়ে আসে তার।
বিস্তারিত»সনদবিহীন আত্মজ
-
ঙ.
…শশাঙ্ক নামে একটা ছেলে জন্মেছে একটু আগে। ম্যাটার্নিটি ওয়ার্ডের ঘোলাটে পর্দাঢাকা কেবিন থেকে তার চিল-চিৎকার ভেসে আসছে। ফিনাইলধোয়া ঘরে জীবাণুমুক্ত তোয়ালেতে সে জড়ানো। রোগ-জরা তাকে এখন ছুঁতে পারবে না। আরো অনেক অনেক দিন পরে সে পঙ্কিল হবে, তার আগে এখন অন্তত সে নিষ্পাপ, সরল, নির্মল আগমনের পরে কাঁদছে। শশাঙ্কের মা, একটু আগে প্রসবজনিত রক্তক্ষরণে মারা গেছেন চুপচাপ। মৃত্যুর একটু আগে তিনি একবার শশাঙ্ককে কোলে নিয়ে তার নরোম মাথায় চুমু খেয়ে বিড়বিড় করে কী যেন বলেছেন।…
বিস্তারিত»রূপবিলাস- ৩,৪
৩.
এই মানুষটার মাথায় শিং, লেজও আছে একটা। মুখে ভুবনভোলানো হাসি। কিন্তু সে জানে লোকটা তার জন্যই অপেক্ষা করছে বছর ধরে, যুগ যুগ ধরে। হাসির মোহে আর পরবে না সে, উল্টা ঘুরে দৌড় দেয়। কিন্তু একি পায়ের নিচে মাটি কোথায়?!! সব ষড়যন্ত্র ঐ বুড়ো বদমাসটার। নিচে তাকায় না সে, যদি হাল ছেড়ে দেয় শরীরটা। হাল ছাড়া যাবে না, হারা যাবে না।