অত্যাচার

বাবা বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। এও কি হতে পারে? সম্ভব? তবে তিনি গেছেন। এ সত্যটি জানার পর দুটি বিষয় আমাদের সবার নজরে এল। বাবাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে এই বিষয়টিই এর আগে কারো মনে হয়নি। তাঁর জন্য সবাই কাতর হয়ে পড়লাম। এ ঘটনার আগে তাঁর অনুপস্থিতি আমরা কেউ কখনো টের পাইনি। বাবাকে ভালোবাসি কি-না তা নিয়ে কখনো ভাবিনি, ভাবতে হয়নি আসলে। তিনিই বোধহয় আমাদের ভালোবাসা চাননি। কিংবা ভেবেছেন আমাদের ভালোবাসা চেয়ে তিনি কখনো বোধহয় পাবেন না। সব সময় তাঁকে মনে হয়েছে সর্বদা বিরাজমান একজন প্রয়োজনীয় খলনায়ক যিনি আমাদের মাকে সুখী করতে পারেন না। পিতাকে ভিলেন মনে হওয়া ছেলেমেয়ের জন্য একটি ভয়ংকর ব্যাপার। তবে এ ধারণাই বরাবর আমাদের মনের মধ্যে লতার মতো পেঁচিয়ে ছিল। এমন মানুষকে নিয়ে আমরা ভাববো? তাঁকে নিয়ে আমরা ভাববো কেন? বরং তিনিই আমাদের নিয়ে ভাববেন। তিনিই বাবা, তিনিই স্বামী। এ দায়িত্ব তিনিই বেছে নিয়েছেন, তাঁকেই আমাদের নিয়ে ভাবতে হবে।

মাকে সুখী করতে না পারলেও, আমাদের দেখাশোনা তিনি করেই গেছেন। আমরা তিন ভাই-বোন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি—ক্লাসে বসেও টের পেয়েছি তিনি আমাদের ঘাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন। শিক্ষকের কথা একঘেঁয়ে লাগলে একবার যে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আকাশ দেখব, তারও উপায় ছিল না। মনে হতো, এই বুঝি বাবা দেখে ফেলবেন।

এমন অনেকবার হয়েছে যে তিনি অসময়ে বাজার থেকে ফিরে মাছ এনে রেখে দিতেন রান্নাঘরের গোড়ায়। আশা করতেন আমাদের মায়ের শরীর খারাপ থাকলেও বটি টেনে মাছ কুটতে বসবে। অসময়ে বাজার আনলে মা কুটত না—মাছ ভর্তি থলিটা ছুড়ে মারতো উঠনে। প্রায়ই এমন হতো।

মাছগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এশার নামাজের পর পর্যন্ত পড়ে থাকত। নামাজ শেষ করে টর্চলাইট হাতে সেগুলো কুড়িয়ে কুটতে বসতেন বাবা নিজেই। আমাদের ফ্রিজ ছিল না। দিনের বাজার দিনেই কুটে জ্বাল দিয়ে রাখতে হতো।

মা অনেক গালি দিতেন। তাঁর উত্তেজিত মুখখিস্তি উপেক্ষা করে খড়ির চুলো জ্বালিয়ে বাবা মাছ জ্বাল দিতেন। তারপর আমাদের শুতে যেতে বলে তাঁর স্ত্রীর রাগ ভাঙাতে ও শরীরের যত্ন নিতে যেতেন। আমরা বাবাকে মাছ কুটতে দেখে খুব মজা পেতাম। মা এই দৈত্যের মতো মানুষটিকে দিয়ে কাজ করাচ্ছে। কতই না কষ্ট দেয় সে মাকে। জিঘাংসা-মিশ্রিত আনন্দ পেতাম! বাবা মেয়েদের কাজ করছেন। মায়ের রক্তচক্ষু আর তারস্বরে গালির ফোয়ারা দেখে আনন্দ প্রকাশ করতে সাহস পেতাম না।

কতবার যে মা রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে গুনে শেষ করা যাবে না। ঝগড়া শুরু হলে মা গালি শুরু করতেন। তাঁর গালি শুনতে-শুনতে একপর্যায়ে সহ্য করতে না পেরে বাবা কষে চড় বসিয়ে দিতেন তাঁর স্ত্রীর গালে। মায়ের ঠোঁট বেয়ে রক্ত গড়াত। গালিগালাজের গতি আরো বাড়ত। একপর্যায়ে একটা ছুরি হাতে নিতেন মা তাঁর স্বামীকে আঘাত করার জন্য। পারতেন না। তাঁর দৌড় ওই পর্যন্তই। গালিগালাজ, রক্তমূর্তি আর বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া।

বাবা-মা’র এই সম্পর্কের কথা পাড়ার সবাই জানত। তাঁরা আমাদের ছোট চোখে দেখতেন। যেন সার্কাসের ক্লাউন। কষ্ট পেতাম। পড়া, খেলাধুলা—কিছুতেই মন ছিল না। শুধুই কষ্ট আর পালিয়ে থাকার চেষ্টা। পালিয়ে থাকা যেত না। তাঁরা আমাদের গর্ত থেকে বের করে নিয়ে আসত মশকরা করার জন্য। বুঝে গিয়েছিলাম পালিয়ে না থেকে আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। আমি আমার দু’বোনকে আগলে রাখার অনেক চেষ্টা করেছি। পণ করেছি, এই দৈত্য-বাবার কাছ থেকে মাকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের আত্মীয়রা আসতেন বাবা-মাকে বোঝাতে এবং আমাদের করুণা দেখাতে। আমাদের খালাত-মামাত ভাই-বোনেরা আমাদের সঙ্গীন অবস্থা দেখে দাঁত বের করে হাসত। নিজেদের মানুষ মনে হতো না। যাদের বাবা-মা সারাদিন মারামারি করে, তাদের বেঁচে থাকার কি প্রয়োজন? আমাদের সাথে রাস্তার ছেলে-মেয়েদের মতো ব্যবহার করতেন। মামা-চাচারা তাঁদের ছেলে-মেয়ের বিয়েতে আমাদের ডাকতেন না। পাছে বাবা-মা সেখানেও ঝগড়া করে তাদের অনুষ্ঠান পণ্ড করে।

এভাবেই অনেকগুলো বছর পার হয়েছে। আমরা এভাবেই বড় হয়েছি, আমাদেরও সংসার হয়েছে। এখন বাবা-মা, আমি, আমার স্ত্রী জয়তী আর আমাদের মেয়ে অনু থাকি এ বাড়িতে। বাবা-মা’র সম্পর্ক সেই আগের মতো আছে।

সেই বাবা বাড়ি ছেড়ে গেছেন। এশার নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়ে আর ফেরেন নি। সাধারণত, ওজিফা-জিকির সেরে দশটায় তিনি বাড়ি আসেন। আমি ততক্ষণে বাড়িতেই। বাবা ফিরলে একসঙ্গে খেতে বসি। সারাজীবন তা-ই হয়েছে। একসঙ্গে খেয়েছি। তবে তাঁদের ঝগড়াঝাটির রাতগুলো বাদে।

জয়তী অনুকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে। অফিসের কিছু কাজ সারছি; মা এসে ঘরে ঢুকল।

‘বাবা, দশটা পেরিয়ে গেল। তোর বাবা তো ফিরল না।’

‘এসে যাবে, মা; চিন্তা করো না। ওষুধের দোকানে দাঁড়িয়েছে বোধ হয়। তুমি বসো আমার কাছে; আমি কাজটা সেরে নেই।’

জয়তী আড়চোখে আমায় দেখল। বুঝলাম কী বলতে চাচ্ছে। কাজ রাখতে ইঙ্গিত দিচ্ছে। মা আমার ঘরে না বসে বেরিয়ে যেতে-যেতেই চিত্কার শুরু করল। পান থেকে চুন খষেছে, যেন বাবা এক মস্তবড় দোষ করে ফেলেছেন।

আরো আধাঘণ্টা পেরিয়ে গেল। ফাইলগুলো রেখে আমি জয়তীর সঙ্গে কথা বলছি। মা আবার ঢুকল।

‘কী হলো? বসে আছিস কেন? মসজিদে যা, দেখে আয়। দুর্ঘটনা ঘটল! এমন শরীর নিয়ে মসজিদে যাবার দরকার কী? বাড়িতে নামাজ পড়লেই হয়!’

শুরু হলো আমার মধ্যে অস্থিরতা, ভয়। বাবা কখনোই এমন করেন না। নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে। প্রথমেই মনে এল মলমপার্টির কথা। হেঁটে আসা-যাওয়া করেন মসজিদে। কোনো গাড়ি মেরে দিয়ে গেল না তো! তাহলে তো কেউ না কেউ তাঁকে দেখে থাকবে। এলাকার সবাই তাঁকে চেনে। হঠাত্ করেই বুক কাঁপা শুরু হলো। মসজিদে গিয়ে জানলাম তিনি এশার নামাজ পড়তেই যাননি। কাঁপুনি আরো বেড়ে গেল। পাড়ার ক’জন দোকানি জানাল তাঁকে বাড়ি থেকে নামাজের আগে বেরোতে দেখা গেছে। অপহরণকারীরা তুলে নিয়ে গেল? নাকি কোনো প্রতিবেশী-বন্ধুর বাসায় কাউকে সাহায্য করতে গেছেন। বাবা প্রায়ই মানুষের সাহায্যে বেরিয়ে যান। মোবাইল ফোন নিয়ে নামাজে যান না—ওটা তাঁর বিছানার পাশে টেবিলে থাকে।

কী করব? ফোনেও তো পাওয়া যাবে না। শীলা-শান্তাকে খবর দেবো? নাহ, এত রাতে ওদের ভয় পাইয়ে দেয়ার দরকার নেই। তাছাড়া শান্তা থাকে চট্টগ্রামে। মাথা খারাপ হয়ে যাবে ওর। মা এদিকে চেঁচিয়েই যাচ্ছে—আমাদের সন্ত্রস্ত করে রেখেছে। গালি দিচ্ছে তার স্বামীর ‘কাণ্ডজ্ঞানহীনতাকে’। জয়তীর আমাদের বাড়ির গালিগালাজ গা-সওয়া হয়ে গেছে।

সে বলল, ‘তুমি দেরি না করে থানায় যাও; আশেপাশের হাসপাতালগুলোতে খোঁজ নাও। আমি সামলাচ্ছি মাকে।’

বলেই ও মা’র ঘরের দিকে চলে গেল। মানিব্যাগ পকেটে ভরে, ফোন হাতে নিয়ে, পায়ে স্যান্ডেলটা গলিয়ে দরজা খুলে বেরোব, তখনই আমার ফোনে একটা বার্তা আসার টিং-টিং শব্দ হলো। তাকিয়ে ফোন খুলে দেখি অজানা এক নম্বর। পরে পড়ব মনে করে বন্ধ করার আগেই দেখি বার্তার শেষে ‘বাবা’ লেখা। চোখ বড়-বড় করে পড়লাম। ইংরেজিতে লেখা যার বাংলা করলে দাঁড়ায়—‘তোমাদের মায়ের অত্যাচার আর সহ্য করতে না পেরে আমি বাড়ি ছেড়ে চলে গেলাম। আমি আর তোমাদের সাথে থাকব না। মাকে দেখে রেখো। —বাবা।’

পড়ে আমার মাথা বোঁ করে ঘুরে উঠল। পা কাঁপছে। দুঃস্বপ্ন দেখার সময় চিত্কার করতে চাইলেও যেমন গলা দিয়ে আওয়াজ বের হয় না, তেমন অবস্থা হলো। এও কী সম্ভব! বাবা চলে যাবেন! মায়ের অত্যাচারে! আমাদের মা বাবাকে অত্যাচার করেছে! বাবা এসব কী বলছেন? জয়তী কোথায়? ও কাছে থাকলে ধরে দাঁড়াতে পারতাম। পেছনে তাকিয়ে ওকে দেখতে পেলাম না। মা এখন আর চেঁচাচ্ছে না। তবে শীলার ফোন এল। শীলা আমার বোনদের মধ্যে বড়।

‘ভাইয়া, আব্বা কই?’ কোনো ভূমিকা না করেই তার প্রশ্ন।

‘বাবা নেই।’

‘তার মানে যে এসএমএস-টা পেলাম তা সত্যি?’ কান্না-কান্না গলা শীলার।

‘তোরাও পেয়েছিস?’ কথা বলতে পারছি না, তারপরও জানতে চাইলাম।

‘হ্যাঁ, মনে তো হচ্ছে আমাদের সবাইকেই দিয়েছেন। ভাবি কোথায়?’

‘ও মা-র ঘরে। দেখি ওদিকে যাই।’

‘ভাইয়া, আমি আসছি; ভাবিকে বল আজ তোদের সাথে থাকব।’

মনে মনে বললাম, ‘ভাবি তো সমস্যা না; সমস্যা অন্য জায়গায়। তুই না এলে, আমি বাবাকে খুঁজতে বেরোতাম, খোঁজার অভিনয় করতাম; মাকে বলতাম বাবাকে খুঁজছি। তুই এলে তাঁকে তো বলতেই হবে, বাবার বার্তাটি দেখাতেই হবে।’

এর পরপরই শান্তার ফোন। আমাদের মায়ের বাজখাঁই গলার আওয়াজ পেয়েছে আমাদের ছোট বোনটা। ‘ভাইয়া, আমার কী হবে? মাহমুদ আমাকে আস্ত রাখবে না। শাশুড়ি আমায় কথা শুনিয়ে কুচি-কুচি করবে। যে মেয়ের বাবা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, তার কোনো ঘর নেই। আমি মারা যাব এ বাড়িতে, ভাইয়া। প্লিজ, খুঁজে নিয়ে আয় আব্বাকে।’

আমার নিজেরই পাগল-পাগল লাগছে। বললাম, ‘তুই শান্ত হ; আমি দেখছি।’

বলার জন্য বললাম। কিন্তু করব টা কী? যাব কোন দিকে? কোথায় খুঁজব? মাথা কাজ করছে না। জয়তী কোথায়? কয়েক কদম ভেতরে এসে সোফা ধরে বসলাম। মাথাটা এলিয়ে দিলাম। চিন্তার ঝড় বইছে। বাবার ওপর মা’র অত্যাচার! মা বাবাকে অত্যাচার করে। সারাজীবন তো বাবাই অত্যাচার করলেন। মায়ের অপছন্দের সব কিছুই বাবা করে এসেছেন এতগুলো বছর। এখন তিনি বলছেন তাঁর স্ত্রীর অত্যাচার। মা তাঁর অপছন্দের কী করেছে? আমাদের চোখে তেমন কিছু তো পড়ে নি। আমরা কি একচোখে দেখছিলাম? বাবার দিকটা একবারও ভাবিনি?

জয়তীর পায়ের শব্দ। আমার পাশে এসে বসে রূঢ় ফিসফিসানিতে জানতে চাইল, ‘তুমি! তুমি এখনো না বেরিয়ে বসে ঝিমোচ্ছো? কী হয়েছে তোমার?’

চোখ বন্ধ রেখেই ফোনটা বাড়িয়ে দিলাম। ‘বাবার এসএমএস পড়।’

কতটুকু বুঝলো তা বলতে পারব না, বড়-বড় চোখে তাকিয়ে রইল? বলল, ‘মাকে বলবে কী করে?’ সেও আর ভাবতে পারছে না।

মাকে কী বলব তার চেয়ে বাবার কষ্ট সম্পর্কে আমাদের অজ্ঞতা ও নির্লিপ্ততা আমার কাছে আরো বড় হয়ে দেখা দিল। কেমন সন্তান হলাম যে খেয়ালই করলাম না! মা-বাবার সম্পর্ক নিয়ে এত কিছু ভাবলাম, এত কষ্ট পেলাম অথচ বাবাও যে কষ্ট পেতে পারেন এবং সে কারণে বাড়িও ছাড়তে পারেন তা একেবারেই আমাদের নজর এড়িয়ে গেল! তবে কি এতগুলো বছর কি শুধু মাকেই ভালোবেসেছি? মা যে অকথ্য ভাষায় বাবাকে গালি দিয়ে গেছেন, এখনো দিচ্ছেন—এই ব্যাপারটি কখনোই আমাদের কাছে দোষের মনে হয় নি। মা যখন বাবাকে গালি দেয়া শুরু করেন, প্রতিবারই তাঁদের তেতাল্লিশ বছরের বিবাহিত জীবনের ইতিহাস টানেন। তাঁর গালির বর্ষণ থেকে আমাদের বাবার দিকের পূর্বপুরুষেরাও রেহাই পায় না। তিনি জীবনে কখনো আমাদের বাড়িতে আমাদের দাদার কুলের মানুষদের ঠিকমতো খেতেও দেন নি। বাড়িতে এলে মা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছেন যে তাঁরা লজ্জায় চলে গেছেন। বাবা তাঁদের বাইরে নিয়ে গিয়ে হোটেলে খাইয়েছেন। মায়ের মুখে বাবার প্রশংসা কখনোই শুনি নি। সামান্য চাকরি করার জন্য সারা জীবন তাঁকে ধিক্কার দিয়ে গেছে।

দোষি মনে হলো নিজেকে। মায়ের এমন কর্কশ ব্যাবহার এতদিন আমাদের নজর থেকে পালিয়ে থাকল কী করে? মা কি আমাদের এতই আচ্ছন্ন করে রেখেছিলেন? জয়তী আমার সাথে এ ব্যবহার করলে আমি কী করতাম?

শীলার ফোন এল। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। খুলে দিতেই মামুনকে নিয়ে ঘরে ঢুকল। আতংকিত চেহারা। আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরে কথা না বলে আমার দিকে চেয়ে থাকল। বুঝতে পারছি সে কী ভাবছে। মায়ের ঘর থেকে কোনো সাড়া নেই।

শীলার হাতটা ছাড়িয়ে ওদের বললাম, ‘আমার সাথে আয়।’

সবাইকে নিয়ে মা’র কাছে গিয়ে বললাম, ‘মা, বাবা এসএমএস পাঠিয়েছেন তোমার অত্যাচারে তিনি

বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। এখন বলো কী করব?’

মায়ের এমন ফ্যাকাশে চেহারা আমরা আগে কখনো দেখিনি।

http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/ittefaq-shamoeki/2017/03/10/181113.html

৫,৭৮২ বার দেখা হয়েছে

১২ টি মন্তব্য : “অত্যাচার”

  1. লুৎফুল (৭৮-৮৪)

    ভালবাসা আর বন্ধনের অনন্য এক চিত্রকল্প আঁকা এই গল্পখানা জুড়ে। টুকরো টুকরো কাঁচে বিম্বিত অলৌকিক টান মানুষের সম্পর্কে সূতো দৃশ্যমান অম্লান।
    ~ সামুরাই ক্রমশ: খাঞ্জো সামুরাই হয়ে উঠছে ইকরাম।

    জবাব দিন
  2. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    সব সময় তাঁকে মনে হয়েছে সর্বদা বিরাজমান একজন প্রয়োজনীয় খলনায়ক যিনি আমাদের মাকে সুখী করতে পারেন না। পিতাকে ভিলেন মনে হওয়া ছেলেমেয়ের জন্য একটি ভয়ংকর ব্যাপার -- যেকোন পিতার জন্য এমনটা হওয়াটাও একটা দু্র্ভাগ্যজনক ব্যাপার!
    নামাজ শেষ করে টর্চলাইট হাতে সেগুলো কুড়িয়ে কুটতে বসতেন বাবা নিজেই। আমাদের ফ্রিজ ছিল না। দিনের বাজার দিনেই কুটে জ্বাল দিয়ে রাখতে হতো -- :hatsoff:
    পালিয়ে থাকা যেত না। তাঁরা আমাদের গর্ত থেকে বের করে নিয়ে আসত মশকরা করার জন্য - মর্মান্তিক!
    মামা-চাচারা তাঁদের ছেলে-মেয়ের বিয়েতে আমাদের ডাকতেন না। পাছে বাবা-মা সেখানেও ঝগড়া করে তাদের অনুষ্ঠান পণ্ড করে -- নিয়তির কঠিন পরিহাস!
    এ সমাজে বাবাদের অবদান অনেক সময়ই খুবই আন্ডার রেটেড থেকে যায়।
    গল্পটা স্পর্শ করে গেল! :boss:

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : লুবনা জাফরিন

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।