কাতার সোজা করেন, ভাইসব কাতার সোজা করেন …

ট্রাম্প সাহেবের মনে শান্তি নেই। চমকদার ভঙ্গিতে চটকদার সব কথাবার্তা বলে মার্কিন মুলুকের অর্ধেক আদমকে বেকুব বানিয়ে সাদাবাড়ীর চাবির দখল নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু কেউ তার “লীডারশীপ” কে যথাযথভাবে সন্মান দেয় না, কেয়ার করে না। এমনকি বিবি মেলানি ও কথা শোনেনা, লোকজনের সামনে ঝামটা দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নেয়। বড়ই অসৌন্দর্য্য অবস্থা।

এরই মধ্যে একদিন উপদেষ্টাদের পরামর্শ অনুযায়ী মুসলিমদের সাথে “সৌহার্দ্যের সেতুবন্ধন” স্থাপন করার উদ্দেশ্যে তিনি স্থানীয় এক মসজিদে গেলেন। ঘটনাক্রমে ওটা ছিল মুলত বাঙালীদের মসজিদ। ট্রাম্প সাহেব মসজিদে থাকা অবস্থাতেই নামাজের সময় হল। ইমাম সাহেব ট্রাম্পকে এক কোনায় জুতার ষ্ট্যান্ডের পাশে বসতে বলে বাকিদেরকে নিয়ে নামাজে দাঁড়ালেন।

অবাক বিস্ময়ে তিনি দেখলেন, কেউ একজন বললেন “কাতার সোজা করেন, ভাইসব কাতার সোজা করেন”, আর সবাই হুড়মুড় করে মুহুর্তের মধ্যে লাইন দিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে গেল! কোন গোলমাল ছাড়াই, নিঃশব্দে! ব্যাপারটা ট্রাম্প সাহেবের দারুন মনে ধরলো। ইউরেকা ইউরেকা! ইউরোপ না হোক, অন্তত মুসলমানদেরকে আমার লীডারশীপের আওতায় আনার মন্ত্র পেয়ে গেছি!  উৎসাহের আতিশয্যে স্থান-কাল ভুলে ঢিসসা ঢিসসা করে তার সেই ট্রেডমার্ক ভঙ্গিতে তর্জনিটাকে পিস্তলের মত বানিয়ে ছাদের পানে কয়েক প্রস্থ গুলি বর্ষণ করে ফেললেন মনে মনে।
অতঃপর বেশ কিছুদিন ধরে কঠোর প্রাকটিস করে করে একসময়ে তিনি মন্ত্রটা পুরোপুরি আয়ত্ত্ব করে ফেললেন। এরপর থেকে কোন মুসলমানের সাথে দেখা হলেই তিনি বাংলায় বলেন, “কাতার সোজা করেন, ভাইসব কাতার সোজা করেন”। শ্রোতারা কিছু না বুঝে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। ট্রাম্প সাহেব ভাবেন, এইতো মন্ত্রে কাজ দিচ্ছে!

মন্ত্রের এহেন সাফল্য দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমেই তিনি মিডল ইষ্ট সফরে যাবেন। সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে হবে লীডারশীপ কত প্রকার আর কি কি! গেলেনও। সৌদি আরব সহ কয়েকটি দেশে সফরে গেলেন। সেখানেও একই ভাবে সবাইকে বলতে থাকলেন, “কাতার সোজা করেন, ভাইসব কাতার সোজা করেন”।

ট্রাম্প সাহেবের সফর শেষ হতে না হতেই আরবের মুসলিম লীডারগন বীরদর্পে কাতার সোজা করতে নেমে গেলেন!

পুনশ্চঃ সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, লন্ডনের সন্ত্রাসী হামলার পরে সেখানকার মেয়রের উদ্দেশ্যে ট্যুইটারে তিনি কাতার সোজা করতে বলেছিলেন। ফল স্বরূপ মার্কিন মুলুকের সব শহরের মেয়রগন কাতার দিয়ে সাদিক সাহেবের সমর্থনে দাঁড়িয়ে গেছেন।

 

পুনঃপুনশ্চঃ উপরের এই লেখার সাথে এই খবরের কোন সম্পর্ক নাই

৫,৭৭৭ বার দেখা হয়েছে

২ টি মন্তব্য : “কাতার সোজা করেন, ভাইসব কাতার সোজা করেন …”

মওন্তব্য করুন : খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।