নিউরনে আলাপনঃ দশ

: দু’দিন কথা না হলেই ভেতরটা কেমন করে! মনে হয় বুঝিবা মাস পেরিয়ে বছর হতে চলল!
: ভালো আছো?
: থাক, যদি বুঝতে?
: তুমি সুন্দর ক’রে চোখে কাজল দিও ঠিক,
কপালে একটা ছোট টিপ আর ঠোঁটে লিপস্টিক!
: ইস, আমার বয়েই গেছে।
আচ্ছা, কোনটা বেশি সুন্দর লাগে কাজল, টিপ না লিপস্টিক?
: শৈশবে কপালের টিপ খুব লাগতো, কৈশোরে পড়ে ছিলাম চোখের কাজল নিয়ে, আর বয়স বাড়ছে সাথে বাড়ছে ঠোঁটের লিপস্টিকের আকর্ষণ!
: জি, বয়সের সাথে ভীমরতি ধ’রে আর কারে?
: না, সেজন্যে না। আমার এক সিনিয়র আপা বলেছিলেন, “ছেলেরা সারাজীবনে গড়ে আধামণ লিপস্টিক খায়!”
ব্যাপারটা ক’দিন থেকেই ভাবাচ্ছে! এ জীবনে আমার কোটা পূর্ণ ক’রে যেতে পারবো তো?
: ছেলেরা কীভাবে লিপস্টিক খায়?
ও আচ্ছা, কী অসভ্য! যাও।
: আমিও প্রথমে বুঝিনি, জানো, দু’রাত নষ্ট হলো!
: কেন? সেই আপাকে জিজ্ঞেস করলেই হতো!
: আপারা কল্পনার সুখ আর জীবনের অসুখ হয়েই থাকে জনমে জনমে!
কারও একজন দোতলার আপাকেই দেখে বুঝেছি!
: বেশ বললে তো!
আচ্ছা, বয়সে বড় মেয়েদের প্রতি অনেক ছেলের দুর্বলতা থাকে, না?
তোমার ছিল কখনও? আছে এখনও?
: আমার কোন বিশেষ দুর্বলতা আমি বুঝিনা।
আমি যে সবল এটাই তো আমার চির অজানা!
: কীসব বল না, তুমি?
তোমার সবল লেখা, মুগ্ধ করা কথা, নির্দয় চাহনি, তুমুল মেঘ-বৃষ্টি,
আমার জীবনটাকে তছনছ করা বড্ড অনাসৃষ্টি!
: তাই বুঝি?
: জানি, বুঝবে না, কোনদিনও!
: চিরকেলে বোকা যে …
: আজ কবিতা শোনাবে না?
: করোটির মাঝে ঝিম ধ’রে ব’সে থাকে সেইসব স্মৃতি,
তারে নিয়ে বুনে চলে বাসা, কিংবা স্বপ্নের শেষ,
তারে খুঁড়ে খুঁড়ে জাগায় বেদনার অবশেষ।
জানি বাসি হয়ে গ্যাছে তার লাল শাড়ি, সিঁদুরে সিঁথি!

সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৫
টরন্টো, কানাডা।

 

৪ টি মন্তব্য : “নিউরনে আলাপনঃ দশ”

  1. খায়রুল আহসান (৬৭-৭৩)

    "তুমি সুন্দর ক’রে চোখে কাজল দিও ঠিক,
    কপালে একটা ছোট টিপ আর ঠোঁটে লিপস্টিক!" - নারীসজ্জার এই তিনটে অনুষঙ্গই নারীকে বিমূর্ত করে তোলে।
    কবিতা ভালো লেগেছে।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।