ছোট গল্পঃ এক বাক্স আদর…

(নেট থেকে পাওয়া আমার অতি প্রিয় একটা ইংরেজী গল্পের অনুবাদ। লেখকের নাম অজানা…)

বেশ অনেকদিন আগের কথা…এক লোক তার তিন বছর বয়সী মেয়েকে খুব করে বকে দিলেন। ক্রিসমাস উপলক্ষে সোনালী রঙের ড়্যাপিং পেপার কেনা হয়েছিল। মেয়ে সেটা নষ্ট করে ফেলেছে। টাকা পয়সার যা অবস্থা। তাতে নতুন আরেকটা কেনাও সামর্থে কুলাবেনা।

মেজাজ আরও খারাপ হলো যখন দেখলেন কাগজটা দিয়ে মেয়ে উপহারের একটা বাক্স তৈরী করার চেষ্টা করছে।

বাক্স বানানো শেষে পরদিন সকালে কন্যা তার কাছে ছুটে গেল,

“বাবা, বাবা। এই নাও এটা তোমার জন্য আমার উপহার…”

গতরাতের ঘটনার কথা মনে হওয়াতে ভদ্রলোকের বেশ খানিকটা অনুশোচনা তৈরী হয়েছে। তিনি বাক্সটা হাতে নিলেন। কিন্তু খোলার পর ভেতরে কিছু না দেখে তার রাগ দ্বিগুন হয়ে ফিরে আসল। চিৎকার করে বলে উঠলেন,

“কাউকে উপহার হিসেবে খালি বাক্স দিতে নেই। তার ভেতর কিছু থাকতে হয়।”

ছোট্ট মেয়েটার চোখ ছলছল করে উঠলো। কান্নাভেজা চোখে সে বাবার দিকে তাকিয়ে নীচু স্বরে বলল,

“বাবা, বাক্সটা তো আমি খালি দেই নাই। ওখানে আমি অনেকগুলো চুমু জমা করে রেখেছি। সব তোমার জন্য…”

কিংকর্তব্যবিমূঢ় বাবা ধীরে ধীরে হাঁটু গেড়ে বসে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। গালে একটা চুমু একে বললেন,

“মামনি, আমার ভুল হয়ে গেছে। বুড়ো বাপটাকে মাফ করে দে…”

তার কয়েকদিন পর সড়ক দূর্ঘটনায় মেয়েটি মারা যায়। কথিত আছে উপহারের সেই বাক্সটি বাবা সবসময় সাথে করে নিয়ে ঘুমুতেন। ভালোবাসাহীন জীবনে যখনই তার ভালোবাসা দরকার হতো, বাক্স খুলে একটা আদর বের করে নিতেন তিনি, খুব কৃপণের মত।

১,৪২৬ বার দেখা হয়েছে

১৭ টি মন্তব্য : “ছোট গল্পঃ এক বাক্স আদর…”

  1. আগেও পড়সি সচলে।ভাল্লাগসিলো।কমেন্ট দেয়া হয়নাই।

    আবার পড়লাম।আবারো ভাল্লাগলো।এইবার আর কমেন্ট দেয়া মিস করলাম না।

    খালি স্যাম এর কাহিনীটা জানতাম না।সেটাও জানা হলো।

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।