তারেক ভাই এবং তার কাঠের সেনাপতি

কাঠের সেনাপতি
বই মেলা আসলেই ক্যাম্পাসে একটা অন্য রকম সুবাস পাওয়া যায়, বইয়ের সুবাস। এই সময়ে শামসুন্নাহার হলের কোণায় বা লাইব্রেরীর সামনে আড্ডা গুলোর থেকেও বেশী টানে মেলা। অবশ্য টানারই কথা, বালিকা আর বই দর্শনের এমন সুযোগ আর কোথায় পাওয়া যাবে বলেন। তবে অনেক সময় এই দর্শনটাই সার হয় কারণ বালিকারা যেমন আমাদের পাত্তা দেয় না তেমন সব বই এই গরীব মেধাবী ছাত্রদের পক্ষে কিনা সম্ভব হয় না। তবে আমার মত গরীবরা সুযোগ ছাড়ে না, তক্কে তক্কে থাকে। মেলায় ঘুরে আর মনে মনে লিস্ট করে তারপর একদিন ম্যানিব্যাগটা উলটো করে পুরো ঝেড়ে ফেলে। তারপর চোখে বালিকাদের স্বপ্ন আর হাতে বই নিয়ে বাড়ি যায়। এইবার আমিও বহুদিন ধরে তক্কে তক্কে আছি আর ভাল করে বললে তারেক (৯৪-০০) ভাইয়ের “কাঠের সেনাপতির” অপেক্ষায় আছি।

তারেক ভাইয়ের লেখা লেখির সাথে আমার পরিচয় অনেকটা কাকতলীয় ভাবে। প্রায় দুই বছর আগের কথা ব্লগ জগতে আমি তখন নতুন পাপী। এরকম ঘুরাঘরি করতে করতেই একদিন হঠাত দেখা হয়ে গেল কনফুসিয়াস নামের এক ব্লগারের। সেই লেখকের সমান্তরাল, ইদুর কিংবা শব্দশিল্পী গল্প গুলো দারুণ ভাবে টেনে ধরে। নিঃশব্দে পড়ে যাই লেখকের লেখা গুলো আর আস্তে আস্তে লেখা গুলোই নিশ্চিত করে লেখকের শক্তিমত্তা সম্পর্কে। এর মাঝেই কেটে যায় প্রায় এক বছর আর ব্লগে তখন আমি যথেষ্ঠ পুরান পাপী। এরকম একটা সময় হঠাৎ আমি আবিষ্কার করি এই কনফুসিয়াস আর কেউ না একদা গোমতী হাউস নিবাসী বর্তমানে প্রবাসী তারেক নূরুল হাসান ওরফে আমাদের তারেক ভাই।

তারেক ভাইয়ের লেখালেখির সাথে সিসিবির সবাই কম বেশী পরিচিত। তাই তাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই তারপরেও এই লেখাটা লেখার সময় ভাবছিলাম লেখক তারেকের শক্তিশালী দিক কোনটা। লেখতে লেখতেই মনে হল তারেক ভাইয়ের শক্তিশালী দিক হল তার সহজ সরল গদ্য। লেখালেখির জগতে একটা কথা আছে যে- সম্ভাব্য সকল গল্পই বলা হয়ে গেছে তাই এখন প্রতিযোগিতা পুরাতন গল্পই কে কত নতুন করে বলতে পারে। এই প্রতিযোগিতার দৌড়ে যোগ দিতে গিয়ে অনেক লেখকই ভুলে যান স্থান, কাল, পাত্র। জটিল কোন ভাষা বা কঠিন কোন ফর্মেটে লিখতে গিয়ে দারুণ দারুণ অনেক গল্পের ব্যর্থ পরিসমাপ্তিই আমি দেখেছি পাঠক হিসেবে। তারেক ভাইয়ের লেখা গুলো এরকম অহেতুক জটিলতা থেকে মুক্ত। সহজ সরল গদ্য আর উপমার সুক্ষ প্রয়োগ

এইবার বই মেলায় পরিচিত অনেকর বই বের হচ্ছে। ফেসবুক, নেটের কল্যাণে অনেক আগে থেকেই খবর গুলো আর গোপন থাকে না। তাই “কাঠের সেনাপতির” খবরো আর আমাদের অজানা থাকে না। আমরা জেনে যাই এইবার বই মেলায় ছয় কিংবা সাত তারিখ শস্যপর্ব প্রকশানী থেকে তারেক ভাইয়ের প্রথম গল্পগ্রন্থ “কাঠের সেনাপতি” প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। বইটা পাওয়া যাবে পাঠসূত্রের স্টলে(৭৩-৭৪) । আর তাই আমার মত গরীব পাঠক তক্কে তক্কে আছে সাত তারিখের কারণ সেইদিন সে বগলদাবা করবে লেখক তারেক নূরুল হাসানের ৮০ টাকা মূল্যের প্রথম গল্পগ্রন্থ- কাঠের সেনাপতি।

৪,৩৯৪ বার দেখা হয়েছে

৪৭ টি মন্তব্য : “তারেক ভাই এবং তার কাঠের সেনাপতি”

  1. তানভীর (৯৪-০০)

    তারেকের কাছে "কাঠের সেনাপতি"র সৌজন্য সংখ্যা চাওয়ায় ও যেভাবে কটমট করে তাকাইল, তখনই বুঝে গেছি যে ওর বই কেনা ছাড়া উপায় নাই। 🙁

    ত্রুক্স, তোর উচিত এই বইয়ের আমাদের সৌজন্য সংখ্যা উপহার দেয়া। 😀

    জবাব দিন
  2. টিটো রহমান (৯৪-০০)

    বই কিনুন ; লেখক বাঁচান 😉

    সিরিয়াসলি ....এবারের বই মেলায় তারেকের বই কিনেই ওর প্রতি আমাদের ভালোবাসা প্রকাশের সবচেয়ে ভালো সুযোগ

    আর ভুত থেকে ভুতে ছড়িয়ে দিতে পারলে আরো ভালো.....ও বিখ্যাত লেখক হলে তখন
    নিশ্চয়ই আমাদের অনেক অনেক সৌজন্য সংখ্য দিবে 😀
    তারেক ড়কাস :hatsoff: :hug:

    রাশেদ এত চমৎকার এক্টা লেখা দেয়ার জন্য তোমারেও :hatsoff:


    আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই

    জবাব দিন
  3. তানভীর (৯৪-০০)

    আজকে কয়েকজন কলিগকে ভালো করে বুঝায়ে দিলাম কোথায় গিয়ে তারেকের বইটা কিনতে হবে! 😀

    ত্রুক্স, তোর বইয়ের মার্কেটিং করার জন্য আমাকে আর রাশেদকে খাওয়ায়ে দিস। 😀

    জবাব দিন
  4. কাইয়ূম (১৯৯২-১৯৯৮)

    অসামান্য 'সমান্তরাল' এর অসমান্তরাল লেখক আমাদের নিজেদের তারেকের দুর্দান্ত সব গল্পের সংকলন :thumbup:

    দুর্ধর্ষ প্রচ্ছদের দুর্ধর্ষ 'কাঠের সেনাপতি' দিয়েই এবারের বই কেনার সূচনা করছি ইনশাল্লাহ :hatsoff:


    সংসারে প্রবল বৈরাগ্য!

    জবাব দিন
  5. কামরুল হাসান (৯৪-০০)

    তারেকের লেখা নিয়ে মন্তব্য করার ধৃষ্টতা নেই।
    বই কিনবো তো অবশ্যই। বাকিদেরও কিনতে অনুরোধ করছি।
    বইয়ের বিক্রি বাড়ানোর জন্যে নয়, ভালো লেখা পড়ার স্বাদ নেওয়ার জন্যে।


    ---------------------------------------------------------------------------
    বালক জানে না তো কতোটা হেঁটে এলে
    ফেরার পথ নেই, থাকে না কোনো কালে।।

    জবাব দিন
  6. রকিব (০১-০৭)

    বই কিনেছি; কিন্তু এখনো হাতে পাইনি। আপ্সুস, লেখকের অটোগ্রাফ কপালে নাই। :((
    অফটপিকঃ তিথী ভাবী কেমন আছেন?


    আমি তবু বলি:
    এখনো যে কটা দিন বেঁচে আছি সূর্যে সূর্যে চলি ..

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : মাসরুফ (১৯৯৭-২০০৩)

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।