দত্তক

আমি অনেক ছোট । আমার বয়স তিন বছর। কিন্তু আমার মাথায় অনেক বুদ্ধি। আমরা থাকি শহরের প্রাণকেন্দ্রে একটি বহুতল ভবনের তিন তলায়। শহরে থাকলেও আমাদের পরিবার কিন্তু যৌথ পরিবার। সকালের আলো ফুটতেই কাজিনরা সবাই চলে আসে বড় হলরুমটাতে। বসে খেলাধুলা আর চিৎকার চেঁচামেচির আসর। রীতা খালামনিই আমাদের সবচেয়ে বেশী আদর করে। আমাদের খাইয়ে দেয়, ঘুম পাড়ায় আবার শাসনও করে। সারাটা দিন স্বপ্নের মধ্য দিয়ে কেটে যায়।

বিস্তারিত»

একদিনের ডে ট্যুরের অভিজ্ঞতা : বারো বাজার, ঝিনাইদহ ভ্রমন

এই ব্লগটি তাদের জন্য এড়ানো সম্ভব হবে না,যারা শুধু ভ্রমন পিপাসুই নয়, পুরাকীর্তি এর প্রতি আগ্রহী।

গত শনিবার আমি গিয়েছিলাম যশোর থেকে ২০ কিমি উত্তরে বারবাজারের মাজার আর প্রাচীন মসজিদ দেখতে। ঢাকা থেকে কেউ আসতে চাইলে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ এর পরেই এর অবস্থান। এখানে আরো আছে প্রাচীনতম বটগাছ আর নানা লোককাহিনী। স্বল্প এই ডে ট্যুর আপনি অবশ্যই উপভোগ করবেন।

shortly describe করছি আমার অভিজ্ঞতা…

বিস্তারিত»

বিজয়ের দিনে বিজয়ীর কথাঃ বিস্মৃত এক সুপারহিরোর গল্প

………………………রাআদ রহমান এবং মাসরুফ হোসেন

শুরুর কথাঃ

“What is it that makes these boys have no fear”???

আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র- ভারতীয় একটি মুভিতে এই সংলাপটি শুনে কেন জানি বিশাল একটা ধাক্কা খেয়েছিলাম। স্বাধীনতা সংগ্রামী ভগৎ সিং এবং তাঁর সংগীসাথীরা যখন ফাঁসির মঞ্চে হেঁটে যাচ্ছেন-তাঁদের দৃপ্ত পদচারণা দেখে ব্রিটিশ জেলার মিস্টার ম্যাককিনলে বিড়বিড় করে নিজেকেই এ প্রশ্নটি করছিলেন ।

বিস্তারিত»

চলুন একটি ঝরে যাওয়ার গল্প বদলে দেই

সেই মেয়েটির গল্প বলি। রাশনা। বাবা মা ডাকে রাশু বলে,আমরা কখনো রাশনা কখনো ওর নামটা একটু পরিবর্তন করে বাসনা। আমাদের কথা শুনেই ওর হাসির বেগ বেড়ে যায়। বন্ধুত্বের দাবী নিয়ে বন্ধুকে অনেক কিছুই বলতে পারি বলা যায়। অনেক সন্ধ্যাবেলা জানালা দিয়ে রাশনা আকাশ দেখতো। ক্যাডেট কলেজের চারদেয়ালের মধ্যে বন্দী হয়ে সীমাহীন মুক্ত আকাশ। কখনো সখনো ওর খুব কাছে চলে যেতাম। পেছন থেকে চোখ চেপে বলতাম,রাশনা একটু তুই হাসনা।

বিস্তারিত»

টম ক্রুজ

 

অতি সাম্প্রতিক সময়ে এই পরিচিত নামটি আমাদের কানে  কিংবা নজরে এসেছে আলোচিত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব অনন্ত জলিল এর সুবাদে। আরো একটু পেছনে গেলে পাওয়া যাবে ‘মিশন ইম্পসিবল ৪’ এর দুর্দান্ত অ্যাকশন। সোজা কথায় বললে আমাদের আশেপাশেরই বহু রমণী- তরুণী- বালিকার অতি আপনজন এই টম ক্রুজ।

কিন্তু আমি হলিউডের কারো কথা আজ বলছিনা। অনন্ত জলিল কে নিয়েও কিছু বলছিনা।

বিস্তারিত»

ভয়

 

পহেলা বৈশাখের বিকেল বেলা ।রোদ কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছে । বন্ধুদের সাথে বেরিয়েছে তিয়ানা । স্থানীয় স্কুল মাঠে বসেছে বৈশাখী মেলা। মেলার ভেতর ঢুকতেই নজরে এল নাগরদোলা । হৈ হৈ করে ছুটল সবাই সেদিকে।দু’টো নাগরদোলা বনবন করে ঘুরছে।বন্ধুরা ভিড় ঠেলে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে দিল সিরিয়াল ভেঙে সামনে যাওয়ার জন্য।

‘আমি উঠব না।’ গোমড়া মুখে বলল তিয়ানা।

‘কেন !’ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে প্রিয়ম।

বিস্তারিত»

যা হবার…

 

বশির কাকার সাথে গুটিগুটি পায় একটা পুরনো দোতলা বাড়ির গেটে এসে দাঁড়ায় লাচি।ওর হাতের স্বচ্ছ পলিথিনের ব্যাগে একটা ফ্রক আর একটা প্যান্টের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়।কাকা কলবেল বাজায়।কারও সাড়াশব্দ মেলে না।৪-৫ বার অনবরত বাজিয়ে যাওয়ার পর লাচির বয়সী একটা মেয়ে গেট খুলে দেয়।লাচির দিকে তাকিয়ে তার মুখে হাসি ফোটে।

‘বশির আংকেল,কাজের মেয়ে পেয়ে গেছেন ! বাঁচলাম ! গেট খুলতে খুলতে আমার অবস্থা শেষ !’

এক ভদ্রমহিলা ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন।

বিস্তারিত»

নিখুঁত ছবিটি আমার

ক্লাস শেষে নায়লাকে ঘিরে একটা ছোটখাট জটলা হল । আমাদের ক্লাসেরই একটি ছেলে ওকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে ।নায়লা রসিয়ে রসিয়ে সে গল্প শোনাচ্ছে।এরকম জটলা প্রায়ই হয়।ক্লাসের বেশির ভাগ মেয়েই বেশ সুন্দর।একেকজন ইতোমধ্যে গড়ে ৬-৭ টা প্রস্তাব পেয়ে গেছে! আমি এধরণের জটলার নিয়মিত শ্রোতা।মন দিয়ে গল্পগুলো শুনি।ওদের মধ্যে আমিই বোধহয় একমাত্র ব্যাতিক্রম।কখনো প্রস্তাব পাইনি।ভবিষ্যতে পাওয়ার সম্ভাবনাও দেখিনা।আমি দেখতে ভাল নই।গায়ের রংটি কাল।চোখে-মুখে সুশ্রীতা আছে কি না জানি না,তবে লোকে আমাকে সুন্দর বলে না।একবার একটা ছেলে পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ‘কালী’ বলে মন্তব্য করেছিল।আমি স্রষ্টার দানকে মেনে নিয়েছি।তবে ইদানীং একটা দানা বাঁধতে যাওয়া অশোভন অনুভূতিকে কিছুতেই তাড়াতে পারছিনা।আমাদের দু’বছরের সিনিয়র এক ভাইকে মনে গেঁথে ফেলেছি।অনুভূতিটা অশোভন এ জন্য যে তাকে চাওয়াটা আমার মোটেই সাজে না।অসাধারণ সুদর্শন একটা মানুষ ফয়সাল ভাই।এমন সুদর্শন পুরুষ বাংলাদেশে খুব কমই দেখা যায়।নিজেই নিজেকে বকাঝাকা করি,তাকে তুমি সেভাবে চেনো না।মানুষ কেমন তা জানো না।শুধুমাত্র রূপ দেখে পাগল হলে হবে?

বিস্তারিত»

উল্টোমুখী

শীতের নরম রোদ্দুর । উঠোনে পাটি পেতে লাল রঙা লেপটা শুকোতে দিয়েছেন মা । সোনালী রোদ ছলকে যাওয়া মোটাসোটা লাল লেপটা দেখে খুশির ঝিলিক খেলে গেল নিশির মনে। গুটিসুটি মেরে বসে পড়ল লেপের ওপর।হাতে সুনীলের ‘প্রথম আলো।’ মা ওকে এ অবস্থায় দেখলে চিলচিৎকার জুড়ে দেবেন,এত বড় ধিঙ্গি মেয়ে কাজকর্ম বাদ দিয়ে রোদ পোহাচ্ছে বলে। কিছুক্ষণ আগে মা-মেয়ের এক দফা যুদ্ধ হয়ে গেছে।সকাল থেকে মা নিশিকে ঘরের কাজে হাত লাগাতে বলছেন।কিন্তু নিশি মার কথা গায়ে মাখছেই না।সে বরাবরই অলস স্বভাবের।তার ওপর এখন কলেজে শীতের ছুটি চলছে।

বিস্তারিত»

ভাবনাপঞ্জি

ক’দিন আগেও এ ঘরটা বেশ খোলামেলা ছিল। লোকে তেমনটিই বলত । ক’দিন হল এ ঘরটাকে আমার গুমোট ঘুপচি মনে হচ্ছে। যেন চারপাশটা আমাকে ঠেসে ধরবে।শ্বাস রোধ হয়ে যাবে।ঘর নিয়ে গবেষণার পরিবর্তে এখন আমার অফিসের কাজ-কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা ছিল। আর কথা ছিল ছ’টায় বাসায় ফেরার।ততক্ষণে বেলী – আমার স্ত্রীও অফিস থেকে ফিরবে ।ছোট মেয়ে ঝিনুক আরও আগেই স্কুল থেকে ফেরে।সারা দিনের খাটা-খাটুনির পর স্ত্রী-কন্যার সাহচর্যে সব ক্লান্তি-শ্রান্তি মুছে যা্বে।

বিস্তারিত»

টিউশনি

রেহনুমাদের হলের গেটে অসংখ্য পোস্টার সাঁটা।চিত্র প্রদর্শনী,নাট্যোৎসব,আবৃত্তি কোর্স,বিতর্ক প্রতিযোগীতা –এসব তো আছেই,সেই সাথে টিউশনি আর পার্ট টাইম চাকরীর পোস্টারও অনেক।আজকাল টিউশনির বিভিন্ন মিডিয়া আছে।তারা বিশাল তালিকা ঝুলিয়ে দেয়-‘অমুক অমুক জায়গার তমুক তমুক ক্লাসের ছাত্র/ছাত্রীর জন্য শিক্ষিকা প্রয়োজন!’ অবচেতন মনেই এতদিন সেসব পোস্টারের দিকে তাকিয়েছে রেহনুমা।খুব একটা গা করেনি।শুধু টিএসসিতে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর কোন পোস্টার থাকলে সেদিকে আগ্রহ নিয়ে তাকায়।সময়-সুযোগ মিলে গেলে দু’একটা সিনেমা দেখা হয়ে যায়।কিন্তু গত চার-পাঁচদিন ধরে গেটের পোস্টারগুলো খুব ভালভাবে খেয়াল করছে ও,বিশেষ করে টিউশনিগুলোর।একটা টিউশনির খুব দরকার।ডিপার্টমেন্ট থেকে একটা ট্যুর আয়োজন করা হয়েছে বান্দরবানে।হাজার চারেক টাকা লাগবে।কিন্ত মার কাছে টাকার কথা মুখ ফুটে বলার সাহস নেই তার।ছোট চাকুরে মায়ের ঘাড়ে বেশি বোঝা চাপাতে ইচ্ছে করেনা ।তাছাড়া সামনে আছে ঈদ।মা আর ছোট ভাইকে কোন কিছু উপহার দেয়ার শখটা  উথলে উঠছে মনে।গতমাসে শুধু ডাল-ভাত-ভর্তা খেয়ে খাবারের খরচ থেকে বেশ কিছু টাকা বাঁচিয়েছিল সে।ভেবেছিল সেটা দিয়ে মা আর ভাইয়ের জন্য কিছু একটা কিনবে।কিন্তু মার্কেটে গিয়ে একটা সালোয়ার-কামিজ এত পছন্দ হল যে মা-ভাইয়ের কথা বেমালুম ভুলে হুট করে কিনে ফেলল সেটা।এখন মনে মনে নিজেই নিজেকে দুষছে-রেহনুমা,তুমি বড় স্বার্থপর মেয়ে!নিজেরটা খুব ভাল বোঝ!এত্ত বড় একটা মেয়ে তুমি,অথচ এখনো মায়ের টাকায় চল!কখনো মাকে দিয়েছ কিছু ?

বিস্তারিত»

একাত্তরের একলব্য

মহাভারতের একলব্যের গল্প আমরা অনেকেই জানি।তৎকালীন সময়ের শ্রেষ্ঠ অস্ত্রগুরু ছিলেন দ্রোণাচার্য যিনি কেবল উচ্চবংশীয় রাজপুত্রদের যুদ্ধবিদ্যা শিক্ষা দিতেন।দুর্যোধন থেকে অর্জুন-মহাভারতের শ্রেষ্ঠ বীরগণ অধিকাংশই এঁর শিষ্য।শূদ্র বংশীয় রাজপুত্র একলব্য দ্রোণাচার্যের কাছে অস্ত্রশিক্ষা করতে চাইলে নিম্নবর্ণের অজুহাতে তিনি তাকে প্রত্যাখ্যান করেন।

ভগ্নহৃদয় একলব্য পরবর্তীতে গভীর জঙ্গলে দ্রোণাচার্যের মূর্তি গড়ে সেটিকে গুরুর সম্মানে পূজা করে নিজে নিজেই কঠোর প্রশিক্ষণে আত্মনিয়োগ করেন।এভাবে বহুদিন কেটে যায়-ঘটনাক্রমে একদিন দ্রোণাচার্য তাঁর শ্রেষ্ঠ ছাত্র অর্জুনসহ বাকিদের নিয়ে সেই বনে হরিণ শিকার করতে আসেন।তাঁর পোষা কুকুরটি হরিণের পিছু পিছু বনের ভিতরে ছুটে যেতে যেতে একসময় হারিয়ে যায়।কুকুরের কান্নার শব্দ শুনে দ্রোণাচার্য এবং তাঁর শিষ্যরা বনের ভেতরে একটি কুটীরের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখেন-সাতটি তীরের মাধ্যমে কুকুরটিকে পাশের অশ্বথ গাছের সাথে এমনভাবে গেঁথে ফেলা হয়েছে যে তার গায়ে বিন্দুমাত্র আঁচড় লাগেনি কিন্তু সেটি কোনভাবেই নড়াচড়া করতে পারছেনা।

বিস্তারিত»