মুরাদ টাকলা- ইউনিক বিনোদন, ইউনিক ব্র্যান্ড ( পর্ব ১)

ফেসবুকের উৎপত্তিই বিনোদন ও যোগাযোগের জন্য। সময়ের বিবর্তনে বাংলাদেশের ফেসবুক একটি বিপ্লবের মাঠ হয়ে গেছে। যে যেভাবে পারছে হাতি ঘোড়া মারছে সমানে। ইস্যু ভিত্তিক গোলযোগ আর তথ্যভিত্তিক স্ট্যাটাস কতক্ষন পড়বেন? কিছু বিনোদনের তো দরকার রয়েছে। আজকের চ্যাপ্টারে থাকছে মুরাদ টাকলা।
যারা ফেসবুকে নিয়মিত তারা অবশ্যই জানেন মুরাদ টাকলা কি ও কেন? যারা জানেন না তাদের জন্য মুরাদ টাকলার সংগা ও উদাহারন।

মুরাদ টাকলা অফিসিয়াল ফেসবুক থেকে জানা যায় নীচের তথ্য। ফেসবুক অফিসিয়াল পেজ অফ মুরাদ টাকলা

প্রশ্ন: মুরাদ টাকলা নামটি কী মুরাদ নামক কোনো ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে? এর উৎপত্তি হল কেমন করে?
উত্তর: না। একদা আমাদের একজন এডমিনের নিকট জনৈক Joyonto Kumer লিখেছিলেন “Murad takla jukti diya bal, falti pic dicos kan! Lakapar kora kata bal, (অনুবাদ: মুরোদ থাকলে যুক্তি দিয়ে বল। ফালতু ছবি দিছস ক্যান? লেখাপড়া করে কথা বল)”।

সেই থেকে Murad Takla নামটির উদ্ভব এবং যার বাংলা অর্থ আসলে “মুরোদ থাকলে।” সুতরাং, মুরাদ টাকলা নামটি মুরাদ নামক কোনো ব্যক্তিকে হেয় করে না।
অর্থাৎ যারা ইংরেজি হরফে বিকৃত ভাষায় অনলাইনে বাংলা লিখে চলছেন তাদেরকেই মুরাদ টাকলা বলা হচ্ছে। এই বিকৃতির মাত্রা ইদানীং নির্ধারন করা যাচ্ছে না, কখনও অসভ্য কখনও ফালতু, কখনও অশ্লীল হয়ে যাচ্ছে। তবু সবকিছু নিয়েই সমাজ। তাই সুস্থ বিনোদনের মাধ্যমে এদের হাস্যরস করাই মূললক্ষ্য।

এবারে আসুন দেখি কখন একজনকে মুরাদ টাকলা বলা হয়। নীচের মিমসগুলোতে একটি খসড়া নির্দেশনা পাবেন।

চিত্র- মুরাদ টাকলা মিমস ১

এরপরের মিমস দেখার জন্য প্রস্তুত? দেখুন তাহলে

null

এবারে আসুন দেখি একটি চমৎকার অন্তরঙ্গ স্ক্রিনশট, যেখানে দুজন প্রেমিক- প্রেমিকা ঘুমের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

null

অনুবাদ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে? অনুবাদ পাবার জন্য ফেসবুকের মুরাদ টাকলা পেজে চলে যান। অনুবাদ সহ বিনোদন দেখুন। মনে করেছেন শুধু অনলাইনে এদের জ্বালা সহ্য করতে হচ্ছে? নাহ আসলে তা নয়, চলুন আপনাদের নিয়ে যাই মুরাদ টাকলা স্পেশাল ঈদ শপিং করতে-

null

তাহলে কি বুঝলেন? কিনবেন ভাগিনা সুজ থেকে জুতো? জুতা না কিনে ফিরে আসলেন, ফিরে এসে বসলেন প্রিয় একটি গান শুনতে- হাজার সাগর পাড়ি দিয়ে আমি এসেছি তোমার কাছে………
কিন্তু আসলে কি দেখলেন?

null

বিরক্ত হয়ে গেছেন? চিন্তা করছেন বন্ধুদের দেয়ালে গিয়ে একটু মন্তব্য করবেন। কিন্তু দেয়াল ছবি আর স্ট্যাটাসে গিয়ে দেখতে পেলেন

null

বান্ধবীর সাথে চ্যাট করবেন, কিন্তু ইনবক্স খুলে পেলেন তাজা বিষ। বিষের পেয়ালা হয়না পুরানো-

null

ভাবছেন ছোটবেলায়ই আসলে ভালো ছিল্ম ফেসবুক ছিলনা, অনলাইন ছিল না, মুরাদ টাকলার অত্যাচার ছিল না, হু আরও একজন ঠিক আপনার মতোই ভাবছে……

null

ভয়াবহ অত্যাচার শুরু হবার পর, মানুষ মুরাদ টাকলাদের নিয়ে একরকম চিন্তায় পরে যায়। কারণ যেভাবে এদের প্রকোপ বাড়ছে তাতে চিন্তা না করে আসলে উপায় নেই। রস+আলো এর লেখক এবং ফেসবুকার আলিম আল রাজি সম্প্রতি তার স্ট্যাটাসে মুরাদ টাকলাদের ব্যবচ্ছেদ করেন। আসুন দেখে নেই মুরাদ টাকলাদের নিয়ে তিনি কি ভাবছেন-

মুরাদ টাকলা সাধারণত দুই প্রকার।
১) হেফাজতি টাকলা।
২) ডিজুস টাকলা।

১) হেফাজতি টাকলা
হেফাজতি টাকলারা পত্রিকা পড়ে জেনেছে ফেইসবুকে প্রচুর নাস্তিক বসবাস করে। সেখানে গেলে ঝাকে ঝাকে নাস্তিক মেরে সওয়াব কামাই করা যাবে। অতএব তারা সময় নষ্ট না করে ফেইসবুকে চলে আসে। ২ টাকা দিয়ে ইন্টারনেট প্যাকেজ নেয়। চায়না মোবাইল থেকে লগইন করে তারপর nastic মারা শুরু করে। nastic মারার ফাঁকে ফাঁকে চটি পেইজে লাইক দেয়। মেয়েদেরকে ‘I lik u. u lik me. give nambar. i col u…’ লিখে ইনবক্স করে আর চোখমুখ বন্ধ করে সবাইকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। রিকোয়েস্ট ব্লক হয়ে গেলে নাস্তিকদের স্ট্যাটাসে কমেন্ট করে admin. i blok. ad me. i online 24 our. i giv lik al statas.
হেফাজতি টাকলাদের নিয়ে বেশি লিখলে তারা কল্লা কেটে দিতে ভালোবাসে। অতএব বেশি লেখা যাবেনা।

২) ডিজুস টাকলা
ডিজুস টাকলারা সাধারণত স্মার্টফোন ইউজ করে। hängöut, gf, bf ইত্যাদি নিয়ে এরা এত ব্যাস্ত থাকে যে বাংলা অক্ষরে বাংলা লেখা শেখার সময়টুকু এরা পায়না।
এরা বেশিরভাগ সময় কেএফসি ও বিএফসিতে বসবাস করে। হেফাজতি টাকলাদের সাথে এদের কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে।
হেফাজতি টাকলারা দিন দুনিয়ার খোজখবর বাশেরকেল্লা থেকে হলেও একটুআধটু রাখে। কিন্তু ডিজুস টাকলা এসবের কোনো খবরই রাখেনা। যেমন দেশ যখন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ইস্যুতে উত্তাল তখন এরা স্ট্যাটাস দেয় AjKé Frínzd3r säthè köthìììnnnn mööögä körläm /m\
হেফাজতি টাকলারা ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লিখে। অন্যদিকে ডিজুস টাকলারা ইংরেজি ছোট হাতের ও বড় হাতের অক্ষরের সাথে নানারকম সিম্বল মিশিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করে। যেমনঃ gìbönE ETö kö$2 kènùùù
ডিজুস টাকলাদের নামও থাকে অদ্ভুত। যেমন যার নাম রকিবুল হোসেন ফেইসবুকে তার নাম থাকে Rökìng rOcKì röxxx.

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণারত এবং ক্যাডেট কলেজ ব্লগের ব্লগার মোকাব্বির সরকার চিন্তা করছেন ভাষার উৎপত্তি ও সংরক্ষন এর দৃষ্টিকোন থেকে। তিনি মুরাদ টাকলাদের উদ্দেশ্য করে লেখেন-

আজ থেকে ৫০০ বছর পরে কোন ছাত্র ইন্টারন্যাশনাল আর্কাইভ ঘাটাবে যেখানে বাংলা ভাষার ইতিহাসে বলা থাকবে “বিংশ শতাব্দির শুরুতে বাঙলাদেশে টাকলা ভাষার প্রচলন শুরু হয়!” চলিত ভাষাবিদ মুরাদ টাকলা এই ভাষাকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে জনগণকে ভাষাগত বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন!

বড়দের কথা বার্তার মধ্যে নাক গলিয়ে লাভ আছে? লাভ নেই। আসুন দেখি বিভিন্ন রকম টাকলা, প্রথমেই আসুন দেখি অপরিচিত মেয়ের নাম্বার থেকে ফোন পাওয়া হতাশ টাকলা

null

মায়াবন বিহারিণীর রূপের প্রশংসায় মগ্ন টাকলা-
null

সমাস পড়েছেন? আসুন সমাসের প্রয়োগ দেখি। বলুনতো ব্যাসবাক্য কি হবে? তিন টাকলার সমাহার= ? হু, আপনি ঠিক ধরেছেন ত্রিটাকলা!

null

একজন অশ্লীল টাকলা

null

বিএনপি ও দিগন্ত টিভির ফ্যান টাকলা

null

এবারে বিরহী টাকলা, খুঁজে ফেরে প্রেয়সীকে………

null

null

এবারে আসুন দেখি ইশপ টাকলা। একটি ছোট গল্প ও কিছু অনবদ্য ভাষা ধর্ষন

null
বঙ্গানুবাদ
এক লোকের ছেলেটি খারাপ ছেলেদের সাথে মিশতো দেখে লোকটি কিছু (?) ভালো ম্যাঙ্গো নিয়ে আসলো ও একটি খারাপ ম্যাঙ্গো নিয়ে আসলো। সে তার ছেলেকে ডেকে ম্যাঙ্গোগুলো আলমারিতে রেখে দিল। পরদিন সে তার ছেলেকে সেই ম্যাঙ্গো আনতে বললে সে আনলো, কিন্তু লোকটি দেখলো যে একটি ম্যাঙ্গোও পচেনি। কারন ম্যাঙ্গোতে ভেজাল ছিল। তখন সে দোকানদার দের বললো তোদের জন্য আমি আমার ছেলেকে কিছু শিখাতেও পারি না।

আসুন দেখি একজন ব্যর্থ অভিনেতা টাকলা। কষ্ট আর কষ্ট

null
বঙ্গানুবাদ: আপনি তিশা। আমি আপনার আইডিটা এবং প্রথম সূর্যটাকে পেয়েছি। আমার খুবই শখ নাটক করার। বাট টাকার জন্য পারলাম না। পারলে কল মি প্লিজ তিশা আপু – 0182747XXX1/ 01832XXXX95. মাই নেম ইজ এম, আর, আই সাইমন

আরেকজন হতাশ টাকলী কি বলছে আসুন দেখে নেই

null

ইংরেজি হরফে বাংলা ভাষা ধর্ষন তো দেখলেন, আসুন এবারে দেখে নেই বাংলা হরফে বাংলা ভাষা ধর্ষন অথবা ইংরেজি হরফে ইংরেজি ভাষার ধর্ষন

প্রথমেই তুলির মামুনকে গাঁজা খাওয়াবার উপাখ্যান-

null

অথবা, প্রেয়সী তুমি আমার হৃদয়

null

একজন সমাজ ও রাজনীতি বিশেষজ্ঞ

null

আসুন চলে যাই মুরাদ টাকলা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট এর কিচেনে, কি চলছে সেখানে?

null

লুল টাকলা, একজন বিউটিকে ফোন নাম্বার নিয়ে ফোন করতে বলছে।

null

এবারে ফেসবুক একাউন্ট খোলা সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন, দলে দলে গিয়ে একাউন্ট খুলে আসুন।

null

এবারে একটি বিভ্রান্তির গল্প, আসলে দল কোনটি?

null

বাসায় একা থেকে রান্না করার সম্মুখীন একজন টাকলী, ককিং- কুকিং, বিভ্রান্ত হবেন না।

null

ডলারে দেখেছেন, ট্রাকের পিছনে কখনও দেখেছন? এই সুযোগ সীমিত সময়ের জন্য। ইন ট্রাস্ট উই গড

null

একজন বলদ লেকচারার পাত্রের জন্য পাত্রী চাওয়া বিজ্ঞাপন দেখুন এবারে

null

অতঃপর ম্যাক্সিতে উঠে শিখে নিন ব্যবহারে বংশের পরিচয়

null

একটি দেয়াল লিখন। ডেলিভারি ফেইলিউরের জন্য এই পোষ্ট এর লেখক, পাঠক অথবা ফেসবুকের মুরাদ টাকলা পেইজ দায়ী থাকবে না

null

সবশেষে একটি টিউটোরিয়াল, ছবিটি ডাউনলোড করে নামিয়ে রাখুন এবং এই অনুযায়ী মুরাদ টাকলাদের পোস্ট পড়ুন। বুঝতে সুবিধা পড়তে সুবিধা।

null

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ- সকল স্ক্রিনশট মুরাদ টাকলা পেইজ থেকে নেয়া হয়েছে। ফেসবুকে মুরাদ টাকলা সহ, টুইটারেও মুরাদ টাকলাকে আপনি ফলো করতে পারবেন। নিঃসন্দেহে একদল মেধাবী ছেলে-মেয়েরা এই পেজের পিছনে কাজ করে যাচ্ছে। ভাষার অপব্যবহার রোধ করতে এই পেজের ভূমিকা জোরাল।

( পর্ব চলবে)

২১,০১০ বার দেখা হয়েছে

৮০ টি মন্তব্য : “মুরাদ টাকলা- ইউনিক বিনোদন, ইউনিক ব্র্যান্ড ( পর্ব ১)”

  1. মোকাব্বির (৯৮-০৪)

    তোমার লেখাটার উদ্দেশ্য হয়তো কিছুটা রম্য তবে "মুরাদ টাকলা' পেইজের সাথে সহমর্মিতা প্রকাশ করে আমাদের এরকম লেখা দেয়া, ফেইসবুকে স্ট্যাটাস আপডেটের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাওয়া উচিৎ। লেখাটার জন্য হাসির পাশাপাশি ধন্যবাদ। এরকম প্রচেষ্টার ফলে বন্ধু তালিকার অন্তত একজন সঠিক ভাবে বাংলা বা অন্তত সঠিক ইংরেজী হরফে বাংলা লেখা শুরু করে সেটাই আমদের সফলতা!

    শেয়ারে দিলাম! :thumbup: :thumbup:


    \\\তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা
    অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতামাতার লাশের ওপর।\\\

    জবাব দিন
  2. রায়হান রশিদ (৮৬ - ৯০)

    অবশেষে বর্ণমালার প্রতিশোধ নিতেই যেন 'মুরাদ টাকলা' পেইজের জন্ম। স্রেফ হাস্যরসের বাইরেও এর পেছনে রয়েছে দুঃখের, হতাশার, বিমূঢ়তার ইতিহাস। একটু খুলে বলি। কম্পিউটারে এবং মোবাইল ফোনে যাতে প্রাণ খুলে বাংলায় লেখালিখি করা যায় তার জন্য গত দশ বছরে বহু টুল তৈরী হয়েছে। একটা বাদে বাকি সবগুলো টুলই বিনামূল্যের। দেশের তরুণ প্রোগ্রামাররা বাংলায় লিখবার অত্যন্ত সহজ সে সব ওপেন সোর্স টুল তৈরী করে অনলাইনে ছেড়ে দিয়েছেন যাতে সবাই ব্যবহার করতে পারেন। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি অভ্র কিবোর্ড যা মেহেদী হাসান খান তৈরী করেছেন। এছাড়াও রয়েছে প্রভাত কিবোর্ড, ফোনেটিক, ইউনিজয় এরকম আরও রকমারী কিবোর্ড আর ইন্সটল করার মতো চমৎকার সব বর্ণমালার সফটওয়্যার। এই সব বাংলা কিবোর্ডগুলোর ব্যবহার এতোই সহজ যে এগুলোর কোনোটিই ভালভাবে আয়ত্ত করতে সপ্তাহখানেকের বেশী সময় লাগে না। এভাবে যখন থেকে কম্পিউটারে বাংলায় লিখে ভাব প্রকাশ সহজ হয়ে গেল তখন থেকেই যেন অনেকটা বিস্ফোরনের মতো করেই বাংলা ব্লগ আন্দোলন বেগবান হয়ে উঠলো, অল্প সময়ে গড়ে উঠলো অসংখ্য বাংলা ব্লগ, আর সেই সাথে অসংখ্য নতুন ব্লগার। যাহোক এ তো গেল ইতিহাসের কথা, কিছুটা প্রসঙ্গ থেকে সরে যাচ্ছিলাম, ফিরে আসি মূল কথায়। যা বলছিলাম, কাহিনী দুঃখের। বাংলায় লেখার এতো এতো সহজ উপায় থাকতেও কিছু মানুষ যেন পণ করেই বসেছিলেন তারা কোনোভাবেই বাংলা অক্ষরে বাংলা লিখবেন না। বিশুদ্ধ ইংরেজীতে কেউ যদি বাতচিত করতে চায় তাতে দোষের কিছু দেখি না, যে ভাষায় স্বচ্ছন্দ্য বোধ করবেন সে ভাষাতেই সবাই ভাব প্রকাশ করবেন সেটাই তো স্বাভাবিক। বিভ্রাট বেধে যায় যখন কেউ ইংরেজী হরফে বাংলা লেখার চেষ্টা করেন। বহুদিন এ ধরণের ইংরেজী হরফে লেখা বাংলা পড়তে পড়তে ভ্রুক্ুঞ্চন করেছি, দীর্ঘশ্বাস ফেলেছি, প্রকৃত অর্থ ডিসাইফার করতে কিশোর পাশার মতো নিচের ঠোঁটে চিমটি কেটেছি, এমনকি মাথার চুলও ছিঁড়েছি। কেন ছিঁড়েছি, এবং আমার মতো বাকিরাও কেন ছিঁড়ে থাকতে পারেন তা উপলদ্ধি করতে হলে 'মুরাদ টাকলা' পেইজটিতে একবার ঢুঁ মেরে আসুন। সেই পাকিস্তান আমলে একসময় খাজা নাজীম উদ্দিন গংরা আমাদের উর্দু হরফে বাংলা লেখাতে চেয়েছিলেন, ফলাফল তাঁর এবং তাঁর জাত ভাইদের জন্য ভাল হয়নি। আজ বাংলা লেখা এতো সহজ হয়ে যাওয়ার পরও, পাঠকের সুবিধা অসুবিধার কথা বিবেচনা না করে, কেউ যদি এখনো শখ করে ইংরেজী হরফে বাংলায় লিখে চলেন তাহলে কি করতে ইচ্ছে করে বলুন?

    একদিন বর্ণমালাও প্রতিশোধ নেয়। এবার বুঝুন মজা।

    জবাব দিন
  3. জুনায়েদ কবীর (৯৫-০১)

    রোমান হরফে লেখা বাংলা পড়তে ব্যাপক হোঁচট খেতে হয়...ভাগিনা, আসল...এই শব্দগুলো তো রীতিমত ভয়ংকর... ;;;
    পিসি/ল্যাপটপ থেকে যারা এখনো রোমান হরফে বাংলা লেখে তাদের শাস্তি হওয়া উচিৎ... x-(


    ঐ দেখা যায় তালগাছ, তালগাছটি কিন্তু আমার...হুঁ

    জবাব দিন
  4. সামিউল(২০০৪-১০)
    অভ্রতে "টাকলা ফোনেটিক্স" যোগ করে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়!
    একদিন বর্ণমালাও প্রতিশোধ নেয়

    (সম্পাদিত)


    ... কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!

    জবাব দিন
  5. শাহরিয়ার (০৬-১২)

    pussy pussy pussy cai,
    murad taklar pussy cai..

    ক্লাসিক পোস্ট। :boss: :boss: অল হেইল মুরাদ টাকলা। ::salute::


    • জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব - শিখা (মুসলিম সাহিত্য সমাজ) •

    জবাব দিন
  6. ওয়াহিদা নূর আফজা (৮৫-৯১)

    পুরোটা এখনও পড়িনি। কিছুটা পড়েই তুমুল বিনোদিত হলাম। মাঝে মধ্যে এরকম নির্মল বিনোদন পেতে ইচ্ছা করে। কেউ ইংরেজি হরফে বাংলা লিখলে আমি পড়তে পারতাম না। ভাবতাম এটা বোধহয় আমার লার্নিং ডিজেবিলিটি। এখন কিছুটা স্ব্স্তি পাচ্ছি এই ভেবে যে সমস্যাটা আমার নয়, যে লিখে তার।

    একটা ভুল দেখলাম। মোক্কাবিরের কোটেশনের শুরুতে লিখেছে যে বিংশ শতাব্দী (১৯০১ - ২০০০), আসলে মনে হয় এটা বোধহয় একবিংশ (২০০১- ২১০০) শতাব্দী হবে।


    “Happiness is when what you think, what you say, and what you do are in harmony.”
    ― Mahatma Gandhi

    জবাব দিন
  7. আহসান আকাশ (৯৬-০২)

    দূর্দান্ত :hatsoff: আমি সকল বাংলিশ লেখা খুব প্রয়োজনীয় না হলে সযতনে এড়িয়ে চলি, সেটা টাকলা বা অন্য যে ভার্সন ই হোক না কেন।


    আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে, করি বাংলায় হাহাকার
    আমি সব দেখে শুনে, ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার ৷

    জবাব দিন
  8. পারভেজ (৭৮-৮৪)

    একসময় অনেক কষ্টকরে হলেও এইসব মুরাদ টাকলা পোষ্ট পড়তাম। উপায় ছিল না। পড়ার মত পোষ্ট তো খুউব বেশী পেতাম না, এইজন্যই।
    আজকাল মোটেও চেষ্টা করি না এসব পড়তে। সিম্পল টেকনক হলো মুরাদ টাকলা পোষ্ট দেখামাত্রই স্ক্রল ডাউন টু নেক্সট পোষ্ট...
    মানুষ কষ্ট করে সময় খরচ করে লেখে, অন্যে পড়বে এই আশায়, স্ক্রল্ড ডাউন হবার জন্য না। আশা করছি মুরাদ টাকলারা ব্যাপারটা যেন দ্রুত বুঝতে পারে। যত দ্রুত বুঝবে তাদের জন্য ততই কল্যানের।
    চমৎকার লিখাটার জন্য ধন্যবাদ। কিন্তু জোর করে কতগুলা মুরাদ টাকলা পোষ্ট গেলানোর জন্য রেগে আছি, চোখ ও ঝাঁ ঝাঁ করছে।
    (এই আরেক নতুন উপসর্গ দেখা দিয়েছে। মুরাদ টাকলা পোষ্ট দেখলেই আজকাল চোখ ঝাঁ ঝাঁ করে।)


    Do not argue with an idiot they drag you down to their level and beat you with experience.

    জবাব দিন
  9. হুমায়ুন কবির হাকিম

    দারুন!!! আমাদের দেশে কে বা কারা নাকি ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লেখা শুরু করতে চাইছিল। ইংরেজি অক্ষরে বাংলা লিখতে গেলে বাঙ্গালী কি করতো বোঝাই যায়। মালয়েশিয়ান/টার্কিশরা কি করছে আল্লাহ্‌ই জানেন।

    জবাব দিন
    • তাওসীফ হামীম (০২-০৬)

      😀 ভাষার বিকৃতি হইলেই ব্যঙ্গ করতে ঝাঁপায়ে পরব এইটাই শেষ কথা।
      পড়বার জন্য ধন্যবাদ।


      চাঁদ ও আকাশের মতো আমরাও মিশে গিয়েছিলাম সবুজ গহীন অরণ্যে।

      জবাব দিন
    • রাফী (০৪-০৮)

      হ্যাঁ এটা আমিও শুনেছি - কারা আর? ব্রিটিশদেরই ইচ্ছা ছিল যতদুর জানি। এদিকে মালায়শিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামে এরকম আবার ঐদিকে তুরস্ক মঙ্গোলিয়াতেও একই! ভারতবর্ষেও হিন্দি বাংলা উর্দু গুজরাটি মারাঠী বা তামিল প্রমুখ মূল ভাষাগুলোতে রোমান হরফ প্রচলন করার প্রয়াস ছিল তো বটেই - এর প্রমাণ তো এখন টিভি খুললে ভারতীয় চ্যানেলগুলোতেই দেখা যায়! মাঝখানে আমাদের এখানে "ডিজুস জেনারেশন"এর ব্যানারে মূলধারার এই পথ প্রায় ধরতে বসেছিল বলা যায়। তা হয়তো আর হয়ে উঠেনি কিন্তু এখন এই ফেসবুক জেনারেশনই তো যথেষ্ঠ কাজ করে দিল!

      আচ্ছা পাকিস্তান আমলেও নাকি এরকম আরবী হরফে বাংলা লেখা শুরু করার পরিকল্পনা ছিল? নাকি সেটা আরো আগে?

      জবাব দিন
  10. ইমরানুল হক

    আমার আশেপাশের কিছু আপু ও কাজিনদের এই ভাষা অত্যাচারের শিকার আমি। যতই বলি তাদের, কোন লাভ নাই। তারা 'টাকলা' ভাষা ছাড়া যেন লিখতেই পারে না। এইবার তাদের মধ্য থেকে দুইজন অভ্র ডাউনলোড করলো আপনার পোস্ট পড়ে। আপনার পোস্ট সার্থক। অভিনন্দন। 😀 :boss: :boss:


    বিশ্ব মেতেছে আজ 'আগুন-ঝরা-ফাগুন'-এর উৎসবে। রক্তস্নানে তুষ্ট হৃদয়। প্রতিটি নিঃশ্বাসে শকুনের আনাগোনা অনবরত।

    জবাব দিন
  11. এই বিকলাঙ্কিত ভাষার কারনে বিরক্ত ছিলাম,জানতাম না এই ভাষার ইতিকথা। টাকলার ইতিহাস জানতে পেরে ভালো লাগল। এই মাঝরাতে হাসতে হাসতে ঘুমাতে যাবো 😀 । এই পোস্টের জন্য ধন্যবাদ...।

    জবাব দিন
  12. রেজা শাওন (০১-০৭)

    গতকাল হাসিবের রুমে ঘুমাচ্ছিলাম। মাঝ রাতে ওর বিকট হাসি শুনে তোমার পর্ব- ২ পোস্টটার আবিস্কার ঘটে।

    একদম অনন্য রচনা। ভাষা সিরিয়াস বিষয়, এটাকে যে হালকা করে দেখবে, লিখবে কিংবা সেভাবেই ভাষার চর্চা চালু রাখবে- তাদের চিকিৎসা'র দরকার আছে।

    জবাব দিন
  13. ঋত্বিক ভট্টাচার্য

    সিরিয়াসলি!!! মনে করতে পারছি না শেষ কবে এত ভাল আর মজাদার ব্লগ পড়েছি! আর সত্যি বলতে কি মুরাদ টাকলা এপার বাংলাতেও আছে! অনেক আছে! আমার ভাইই এক পিস উদাহরণ!বিশাল খিল্লি করা যায় এদের নিয়ে! তবে হ্যাঁ, হেফাজতি আর জামাতি ছাগু দের লেভেলে পৌঁছানো সত্যিই কঠিন!

    জবাব দিন

মওন্তব্য করুন : ফারহানা

জবাব দিতে না চাইলে এখানে ক্লিক করুন।

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।