সৌদি আরবে ৮ বাংলাদেশীর শিরশ্ছেদ, আমরা কোন যুগে আছি?

আগামীকাল পরীক্ষা আছে তারপরও গতকাল থেকেই একটা খবরে কোনভাবেই মনটাকে স্থির করতে পারছি না। আট বাংলাদেশীর শিরশ্ছেদ। আমি যেমন আগে একবার বলেছিলাম পৃথিবীতে এমন কোন ঘটনা নেই যেটাতে শতভাগ মানুষের মতের মিল ছিল তেমনি এই ঘটনাতেও দেখলাম নানা মুনির নানা মত। কোন এক ব্লগে দেখলাম একজন বলছে শুধু ৮ জন না ৮০০০ জন বাংলাদেশীর শিরশ্ছেদ করা উচিত, কেউ বলছে আইনের সঠিক প্রয়োগ আছে জন্যেই নাকি সৌদি আরবে সবাই শান্তিতে আছে। আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় এতজন বাংলাদেশী যারা নিতান্তই ভাগ্যের অন্বেষণে আত্মীয় স্বজন কে ছেড়ে সেই বিদেশ বিভূঁই এ পাড়ি জমিয়েছিলেন সেই সব মানুষের এই মর্মান্তিক পরিণতিতে নিজ দেশের মানুষও এমন কথা বলতে পারে। তাদের কথায় কেমন যেন তালেবান ঔদ্ধত্য।

কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে প্রায় সব দেশেই হত্যার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আমাদের দেশেও তাই। কিন্তু এই মৃত্যুদণ্ডটাও যে কত ভয়ঙ্কর ভাবে কার্যকর করা যায় তারই যেন একটা উদাহরণ জনসমক্ষে শিরশ্ছেদ। বুঝলাম আইনের সঠিক প্রয়োগ করা উচিত কিন্তু এই মধ্যযুগীয় বর্বরতা কি এই যুগে ত্যাগ করা যায় না? বলা হয়ে থাকে ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম কি এমনই ধর্ম যে এই ভাগ্যান্বেষী মানুষগুলোর অপরাধে জড়িয়ে পড়ার কারণ উদঘাটনের সুযোগও রাখে না, সুযোগ রাখে না আরো একবার ভুলগুলোকে সংশোধন করে সঠিক পথে ফিরে আসার?  আজকে বাংলাদেশী হয়েও যারা এই মৃত্যুদণ্ডের সাফাই গাইছেন তাদের বলছি আজ যদি এই ৮ জনের কেউ আপনার আত্মীয় হত তাহলে ন্যায় বিচারের কথা এত উঁচু গলায় বলতে পারতেন না। এটাও জানি দন্ডপ্রদানকারি দেশটি সৌদি আরব না হয়ে পশ্চিমা কোন দেশ হলে আপনাদের অনেকেই উল্টো পথে চলতেন।

৩,৪৪১ বার দেখা হয়েছে

১৫ টি মন্তব্য : “সৌদি আরবে ৮ বাংলাদেশীর শিরশ্ছেদ, আমরা কোন যুগে আছি?”

  1. সাইফুল (৯২-৯৮)

    গতকাল থেকেই এই খবর শোনার পর থেকে তীব্র ঘৃণা জন্মালো সৌদি আরবের বিচার ব্যবস্থার কথা চিন্তা করে। এই অসহায় ৮ জন সঠিক বিচার পেয়েছে কিনা তারা যেমন বলে যেতে পারেনি কিংবা তাদের পরিবারের লোকেরাও কখনো জানতে পারবেনা। তবে যাদের ছেলে/ভাই অথবা স্বামী এই ঘটনার স্বীকার কেবল তারাই বলতে পারবে এই হারানোর আর অপমানের যন্ত্রণা কত।

    আজ যে সৌদি আরব তা যে ওহাবী পন্থী কিছু বিপদ্গামী মুসলমানের রাজত্ব তলে তা ত সবাই জানে। যারা ইসলাম ধর্ম কে নিজেদের প্রয়োজন মত ব্যবহার করছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। যে দেশে এয়ারপোর্টে আমেরিকান, ব্রিটিশ কিংবা কানাডিয়ান
    পাসপোর্ট থাকলে আপনার জন্য আলাদা লাইন আর আপনে মুসলমান কোন গরীব দেশ থেকে গেলে গাদাগাদি করে লাইনে দাড়াতে হয় যেখানে থাকে ইমিগ্রেশন অফিসারদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য সেদেশে আর যাই হোক ন্যায়বিচার আছে, আমি তা জীবনেও বিশ্বাস করবোনা।

    আর আমাদের নেতা-নেত্রীদের যে কতটুকু দেশপ্রেম বা হ্যাডম আছে তা ত দেখতেই পাচ্ছি। সবার সামনে এভাবে আমাদের দেশের ৮ জন লোকের শিরঃচ্ছেদ করলো, না তারা জানালো কোন প্রতিবাদ বা না জানালো কোন সমবেদনা!

    কোথায় আমাদের মিডিয়ার আপু-বোনরা যারা কথায় কথায় বিদেশী কূটনৈতিকদের সামনে ফিডারের মত মাইক ধরে নিজ দেশের সমস্যা নিয়ে মতামত জানতে চায়। তারা কি একবারও গিয়েছে সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসে যে কেন এই কাজ করা হল কিংবা এই ৮ জন ন্যায়বিচার পেয়েছি কিনা, অথবা এরা যদি আমেরিকান পাসপোর্ট ধারী হত এদের কি এভাবে সবার সামনে শিরঃচ্ছেদ করতে পারত কিনা?

    আরো আফসোস লাগে সেসব ভাইবোনদের কথা চিন্তা করে যারা এই অমানবিক শিরঃচ্ছেদ এর ঘটনার আপদমস্তক না জেনে এর পক্ষে সাফাই গেয়ে যাচ্ছে আর বলছে সৌদিআরবে শুধু শান্তি আছে...

    জবাব দিন
  2. আজিজুল (১৯৭২-১৯৭৮)

    এটা এমন একটা ব্যপার যে কমেন্ট করার ভাষা কারুরই নেই।শরিয়াহ আইন অতি মাত্রার নিষ্ঠুরতার পরিচায়ক এই জন্যে যে, এত কঠিন শাস্তির কারনে একদিন সমাজ থেকে এই সমস্ত অপরাধ সমূলে উৎপাটিত হবে ! এ বিষয়ে বলার ধৃষ্টতাও আমার নেই।
    কিন্তু এটা মহা অন্যায়, যে একই পাপে ব্রিটিশ, ফ্রেঞ্চ, এমেরিকানরা ক্ষমা পেলে শুধু 'গরিব' হওয়ার দোষে ৮ জন মানুষ ক্ষমার অযোগ্য হয়ে পড়লো ? ধিক ওই দ্বৈত নীতির !!!


    Smile n live, help let others do!

    জবাব দিন
  3. রাব্বী (৯২-৯৮)
    সৌদি আরবে ৮ বাংলাদেশীর শিরশ্ছেদ, আমরা কোন যুগে আছি?

    - যুগের নাম বর্বর যুগ। যেটা সৌদি আরবে অনাদিকাল ধরে টিকে আছে এবং আশা করা যায় যে তা বহুকাল টিকে থাকবে।

    আমি আইন জানি না। কিন্তু এটুকু বিশ্বাস করি, পৃথিবীর কোন আইন দিয়ে কোনদিন অপরাধ সমাজ থেকে চিরতরে নির্মূল করা যায় না। "হত্যার বদলা হত্যা" - এটা একটা মধ্যযুগীয় বর্বর ধারণা। সব হত্যাকান্ডের মোটিভ কখনোই এক না। আধুনিক আইনের দর্শন হলো সামাজিক ন্যয়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং মানবাধিকার রক্ষা করা। এই আটজন শ্রমিকের পাসপোর্ট ক্ষমতাবান কোন পশ্চিমা দেশের হলে শরিয়াহ আইন ঠিকই নড়েচড়ে বসে নমনীয় হয়ে যেতো। এ্যামেনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল স্পষ্ট বলেছে, সৌদি আরবের শরীয়াহ ভিত্তিক বিচার ব্যবস্থা অস্পষ্ট এবং দৃশ্যত আন্তর্জাতিক মান থেকে অনেক নিচে।

    যত সব জানোয়ারের দল।


    আমার বন্ধুয়া বিহনে

    জবাব দিন
  4. জাহিদ (২০০০-২০০৬)

    আমাদের দেশের নারীরা গৃহপরিচারিকার কাজ করতে গিয়ে যখন নির্যাতিত হন লাঞ্ছিত হন তখন শরীয়ার কোন আইন তাদের রক্ষা করে না। এই আরব ধনকুবের বা রাজা বাদশাদের চরিত্র সম্বন্ধে ভালই জানা আছে। ইউরোপে অবকাশ যাপন করতে গিয়ে তারা কি করে সেটাও আমাদের জানা আছে। তাদের দ্বারা আর যাই হোক শরীয়ার ন্যায় বিচার হতে পারে না। একটা মানুষ যার ভাষা বাংলা তার বিচার হচ্ছে আরবী ভাষায়, এমনি বিচার ব্যবস্থা আত্নপক্ষ সমর্থনের জন্য আইনজীবি নিয়োগেরও কোন সুযোগ নেই।

    জবাব দিন
  5. রাজীব (১৯৯০-১৯৯৬)

    আমার কাজিন সউদিয়ারবে ছিল। স্মার্ট, চেহারা ভালো। মুটামুটি পালাইয়া দেশে ফেরত আসছে। ঐ দেশে থাকলে তার জিনিস কাইটা ওদের যাদুঘরে রাইখা দিত।

    মানুষের আকার নিয়া যেই বান্দরগুলা এখনও পৃথিবীর বুকে বিচরণ করতেছে তারা হইল আরব।


    এখনো বিষের পেয়ালা ঠোঁটের সামনে তুলে ধরা হয় নি, তুমি কথা বলো। (১২০) - হুমায়ুন আজাদ

    জবাব দিন
  6. মেহেদী হাসান (১৯৯৬-২০০২)

    আমাদের পররাষ্ট্র সচিব ইহাতে কোন সমস্যা দেখছেন না বলে ঘোষনা দিয়েছে গতকাল...... শুনে প্রীত হইলাম...ইহার চেয়ে ভাল তিনি আর কি বলতে পারতেন...আমার জানা নাই...... হা হা হা হা

    জবাব দিন

মন্তব্য করুন

দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করুন। ইংরেজীতে প্রদানকৃত মন্তব্য প্রকাশ অথবা প্রদর্শনের নিশ্চয়তা আপনাকে দেয়া হচ্ছেনা।